আজকাল অল্প বয়সেই শরীরে হানা দেয় একাধিক জটিল রোগ। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ থেকে কোলেস্টেরল সহ বিভিন্ন ধরনের ক্রনিক রোগ শরীরে একবার বাসা বাঁধলেই শুরু হয় নানা জটিলতা। সেক্ষেত্রে শুধু ওষুধ নয়, আমাদের হাতের কাছে এমন অনেক খাবার রয়েছে সেগুলো নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া য।য। তেমনই প্রতিদিনের রান্নায় যে সব মশলা ব্যবহার করা হয় তার মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে বহু রোগ প্রতিরোধের উপাদান। আধুনিক গবেষণা বলছে, এই মশলাগুলোর মধ্যে এমন অনেক উপাদান রয়েছে যা ক্যানসার, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তেমনই ১৪টি মশলার বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক-
১. গোলমরিচঃ গোলমরিচে ‘পিপেরিন’ নামে এক যৌগ থাকে যা কোষে প্রদাহ রোধ করে, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে এবং শরীরকে ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। গোলমরিচের হজমক্ষমতা বাড়াতে, পেটের গ্যাস কমাতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রাচীনকাল থেকেই গোলমরিচ ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ওজন কমাতেও কাজে আসতে পারে গোলমরিচ।
২. এলাচঃ এলাচ হজমে সাহায্য করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়ক। এটি মেটাবলিসম বৃদ্ধি করে, ফ্যাট শোষণ করে। অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যে ভরপুর এলাচ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
৩. দারুচিনিঃ যুগ যুগ ধরে প্রাচীন আয়ুর্বেদে ব্যবহার হয়ে আসছে দারুচিনি। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দারুচিনির মধ্যে উচ্চ পরিমাণে সিনামালডিহাইড রয়েছে। যার কারণে দারুচিনি খেলে মস্তিষ্ক দ্রুত কাজ করে। রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় দারচিনি। একইসঙ্গে এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায় যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোধে সহায়তা করে।
৪. লবঙ্গঃ শুধু রান্নার স্বাদ বাড়াতেই নয়, লবঙ্গের অনেক ঔষধি গুণও রয়েছে। শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর লবঙ্গ কোষে সুরক্ষা দেয় এবং প্রদাহ কমায়। দাঁতের ব্যথা ও সংক্রমণেও কার্যকর।
৫. ধনেঃ ধনের মধ্যে ক্যালশিয়াম, ফাইবার, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, খনিজ, বি-ক্যারোটিনয়েডস, পলিফেনলসের মতো উপকারী ভেষজগুণ রয়েছে। ধনে বীজ ও পাতায় আছে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যও বর্তমান। রক্তে কোলেস্টেরল ও ব্লাড সুগার কমাতে সহায়তা করে।
৬. রসুনঃ হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর রসুন। এতে থাকা ‘অ্যালিসিন’ উপাদান প্রদাহ কমায়, সংক্রমণ রোধ করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রসুনের গুণের শেষ নেই। পুরুষদের যৌন ক্ষমতা বাড়াতে প্রাচীনকাল থেকেই ব্যবহার করা হয় রসুন।
৭. আদাঃ বমি ভাব ও হজমের সমস্যায় উপকারী আদা। পাশাপাশি এটি প্রদাহ রোধে সহায়ক এবং ব্যথা উপশম করে। আদা ফ্যাট শোষণ কমায়, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে

৮. ওরিগানোঃ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট গুণে ভরপুর ওরিগানো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অরিগ্যানোতে রয়েছে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদান। অরিগ্যানো থেকে পাওয়া তেল চিকিৎসাতেও ব্যবহার হয়।
৯. পাপরিকাঃ এই মশলা বিপাক বাড়াতে সাহায্য করে। এতে প্রচুর ভিটামিন এ থাকে, যা চোখ ও ত্বকের জন্য ভালো।
১০. পিপারমিন্টঃ হজমের গণ্ডগোল দূর করে, মাথাব্যথা ও পেশির ব্যথা উপশমে কার্যকর।
১১. রোজমেরিঃ স্মৃতিশক্তি বাড়ায়, মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে এবং স্নায়ুর প্রদাহ কমায়।
১২. হলুদঃ ‘কুরকুমিন’ নামক উপাদান ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। এটি প্রদাহ রোধে এবং জয়েন্টের ব্যথা কমাতেও কার্যকর।
