আজকাল ওয়েবডেস্ক: ৩.৬ কোটির বাড়ির উত্তরাধিকার নিয়ে তুমুল বিবাদ দুই সন্তানের মধ্যে। মামলা গড়াল আদালতে। কিন্তু সেখানেই মামলা গড়াল এমন দিকে যাতে সর্বস্বান্ত হওয়ার উপক্রম হল দু’জনের। কারণ কোর্টে গিয়ে ভাই-বোন দু’জনেই জানতে পারলেন তাঁদের কেউই পিতামাতার আসল সন্তান নন! দু’জনেই দত্তক নেওয়া। চীনের তিয়ানজিনের এমনই একটি ঘটনার কথা ঘুরপাক খাচ্ছে সমাজ মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে
 
 আরও পড়ুন: ‘স্তনদুগ্ধ আইসক্রিম’ খেতে হুড়োহুড়ি বড়দেরও! কত দাম? কোথায় পাওয়া যাবে এই স্বাদ?
 
 ঘটনার সূত্রপাত হয় ২০২৫ সালের মার্চ মাসে, তিয়ানজিনের বাসিন্দা দুই সন্তানের পিতা সান-এর মৃত্যুর পর। মৃত্যুর আগে, সান আইনতভাবে তার প্রায় তিন মিলিয়ন ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩.৬ কোটি টাকা) মূল্যের একটি বাড়ি শুধুমাত্র ছেলের নামে হস্তান্তর করে যান। তবে তিনি অন্য একটি নোটে উল্লেখ করে যান যে, তাঁর ১৯৬৬ সালে দত্তক নেওয়া কন্যাকে যেন পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
ছেলের প্রতি বাবা এই ‘পক্ষপাত’ ভাল চোখে নেননি কন্যা। এইভাবে সম্পত্তি হস্তান্তরের বিরোধিতা করে তিনি আদালতে মামলা দায়ের করেন। তাঁর দাবি ছিল, চুক্তিতে কেবল তাঁর বাবার স্বাক্ষর রয়েছে, কিন্তু প্রয়াত মায়ের স্বাক্ষর নেই। সুতরাং, তাঁর মায়ের অংশটুকুও উত্তরাধিকারযোগ্য সম্পত্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। কোর্ট হিয়ারিং-এ তিনি দাবি করেন, “এই বাড়িটি আমাকে আমার বাবা-মা দিয়েছেন; এটি আমার কাছ থেকে কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।”
মামলা চলার সময় হঠাৎ করেই পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে যায়। কন্যা আদালতে প্রমাণ হিসেবে এমন একটি নথি জমা দেন, যেখানে দেখা যায় যে তার ভাই আদতে বাবা মায়ের আসল সন্তান নন। তাঁরা সরকারিভাবে ‘দত্তক’ নিয়েছিলেন তাঁকে। এই তথ্য প্রকাশের পর যখন কন্যার দিকে পাল্লা ভারী, তখন পাল্টা নথি প্রকাশ করেন ভাই। তাতে জানা যায় শুধু ছেলে নয়, মেয়েও দত্তক নেওয়া সন্তান। অর্থাৎ ভাই বা বোন কেউই ওই দম্পতির জৈবিক সন্তান নন।
এই সত্য জানার পর ভাই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। আদালতে যুক্তি দেন যে, তাঁর বোন ১৯৯০-এর দশকেই পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে গিয়েছিলেন। তার পর থেকে তিনিই বাবা-মায়ের দেখাশোনা করেছেন।
তবে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের পরেও, নানকাই জেলা গণ আদালত চীনের দেওয়ানি আইন অনুসারে রায় দেয় যে, দত্তক সন্তানদেরও উত্তরাধিকারের সমান অধিকার রয়েছে। কিন্তু যেহেতু সম্পত্তিটি ২০০৭ সালেই নোটারির মাধ্যমে ছেলের নামে হস্তান্তর করা হয়েছিল, তাই সেটিকে আর উত্তরাধিকারযোগ্য সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করা হবে না।
 
 অবশেষে, আদালতের মধ্যস্থতার পর ভাই তার বোনকে ৫৫০,০০০ ইউয়ান (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬৭ লক্ষ টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হন এবং এই পারিবারিক বিবাদের নিষ্পত্তি হয়।
