সন্তানকে ব্যস্ত রাখতে, খাওয়ানোর সময় বা তার বায়নার জন্যই হাতে ফোন দিয়ে রাখছেন? দিনের অনেকটা সময় ফোন দেখেই কাটায় আপনার একরত্তি? অজান্তেই আপনি তার ক্ষতি করছেন না তো? গবেষণা কিন্তু তাই বলছে। আপনার এই ছোট্ট ভুলেই কিন্তু, আপনার আদরের সন্তানের বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। 

সম্প্রতি আমেরিকার এক মস্তিষ্ক সংক্রান্ত গবেষণায় জানানো হয়েছে অতিরিক্ত ফোন, ল্যাপটপ বা টিভি দেখলে ছোটদের উপর কী প্রভাব পড়ে। ইউনিভার্সিটি অফ ফুকুইয়ের এক গবেষক দল এই গবেষণাটি করেছেন অ্যাডোলেসেন্ট ব্রেন কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট স্টাডির উপর ভিত্তি করে। এই গবেষণায় তাঁরা দুই বা তার বেশি বছরের শিশুদের নিয়ে গবেষণা করে দেখেছেন তাদের মনোযোগ এবং প্ল্যানিং করার ধরনে কীভাবে প্রভাব ফেলছে স্ক্রিন টাইম। 

১০ হাজারের কিছু বেশি শিশুদের নিয়ে করা এই গবেষণায় ৯-১০ বছরের কিশোর, কিশোরীদের উপর সমীক্ষা চালানো হয়। পরে ২ বছর বা তার বেশি বয়সের শিশুদের নিয়েও সমীক্ষা করা হয়। তাতেই দেখা গিয়েছে যে শিশুরা দিনের অনেকটা সময় ফোন, ল্যাপটপ বা টিভি দেখে কাটায়, অর্থাৎ যাদের স্ক্রিন টাইম বেশি তাদের কর্টেক্স পাতলা, যার অর্থ তারা তাদের অনুভূতি, প্রতিক্রিয়াকে চট করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, মনে রাখার ক্ষমতাও কম এদের। সিদ্ধান্ত নিতেও সময় লাগায়। 

এই বাচ্চাদের এমআরআই রিপোর্টে দেখা গিয়েছে এডিএইচডিতে আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে যে লক্ষণ দেখা যায় তার প্রাথমিক কিছু লক্ষণ। অন্যদিকে যাদের স্ক্রিন টাইম অনেক বেশি তাদের ডান পুটামেন অনেক কম, ফলে গুছিয়ে সাড়া দিতেও অতটা সক্ষম নয় বাকিদের মতো। 

ট্রানজিশনাল সাইকায়াট্রিতে পাবলিশ হওয়া এই গবেষণা পত্রে জানানো হয়েছে এগুলো সাবধানতা বা সতর্কতা, কিন্তু প্রমাণ নয় যে দিনে অনেকক্ষণ স্ক্রিন টাইম কাটালে স্মৃতি কমে আসে বা প্রভাব পড়ে তার উপর। 
যে শিশুদের স্ক্রিন টাইম বেশি তাদের মধ্যে কম হলেও, অল্প অল্প হয়ে এডিএইচডি লক্ষণ বাড়ছে। আর এতে কমছে কর্টিকাল ভলিউম। 

স্ক্রিন টাইম বলতে, গেম খেলা, টিভি দেখা এবং স্মার্টফোনের ব্যবহার রয়েছে। ফলে এই গবেষণা পত্র থেকে প্রমাণ হিসেবে কিছু দেওয়া না হলেও, এটুকু নিশ্চিত করা হয়েছে যাদের স্ক্রিন টাইম বেশি তাদের মধ্যে মনোযোগের অভাব, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কম।