প্রয়াত জনপ্রিয় চিত্রগ্রাহক সৌম্যদীপ্ত গুইন ওরফে ভিকি। টলিপাড়ায় ভিকি নামেই সবাই চেনে তাঁকে। তাঁর অকালপ্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিনোদুনিয়া। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। কসবায় নিজের বাড়ি থেকে ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে সৌম্যদীপ্তর। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। চিত্রগ্রাহক গিল্ডের সম্পাদক স্বপন মজুমদার। তিনি বলেন, ভিকির দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। বিকেলে এনআরএস হাসপাতাল থেকে দেহ পাওয়া যাবে তারপর। চিত্রগ্রাহকের আদি বাড়ি কলেজ স্ট্রিটে। পরিবার সিদ্ধান্ত নেবে উত্তর না দক্ষিণ কলকাতা, কোথায় তাঁর শেষকৃত্য হবে।” মৃতের পরিবারে রয়েছে তাঁর স্ত্রী ও এক সন্তান। রয়েছেন ওর কাকাও।
পরিচালক রাজা চন্দের দীর্ঘ বছরের সহকারী ছিলেন ভিকি। রাজা চন্দর ‘হালুম’ ও সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পুলিশ’ ছবিতেও চিত্রগ্রাহক হিসেবে কাজ করেছেন। স্বভাবতই তাঁর কথা আজকাল ডট ইন-এর সঙ্গে বলতে গিয়ে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন পরিচালক -“সত্যিই জানি না কী বলব। আমি ঠিক করে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। আমার সব কাজের বিষয়ে ভিকি ছিল আমার ডানহাত। চল্লিশের নীচে বয়স। এইটুকু বয়স! এত টগবগে ছেলে ছিল, ভীষণ প্রাণবন্ত। বিশ্বাস করুন, বুঝতেই পারছি না এমনটা কেন করল ও। আমার অন্যতম প্রিয় বন্ধু ছিল ও। ভাই-ও বলতে পারেন। ভিকির যদি অবসাদ থেকেও থাকত, এতটুকু বুঝতে দেয়নি আমাদের কোনওদিনও। আমার বাড়িতে কতবার এসেছে, একসঙ্গে আড্ডা দিয়েছি, খাবার ভাগ করে খেয়েছি....” বলতে বলতে থেমে যান পরিচালক। বুক ঠেলে বেরিয়ে আসে দীর্ঘশ্বাস।

“আর ক'টা দিন পর আমাদের ‘হালুম’ ছবি মুক্তি পাবে। আমার পরিচালিত সেই ছবিতে চিত্রগ্রাহকের কাজ করেছিল ভিকি। ভাবতেই পারছি না ওঁর স্মৃতিতে সেখানে ছবি থাকবে! ফোন থেকে কী করে ওর নম্বরটা মুছে দেব? আজ যখন এই খবরটা পাওয়ার পর ওর বাড়িতে গিয়েছিলাম, শেষপর্যন্ত ওকে আর দেখতে ওর ঘরে যাইনি। সহ্য করতে পারতাম না। এখনও ভাবতে পারছি না কিছুতেই...” বলতে বলতে ধরে আসে রাজা চন্দের গলা।
রাজা চন্দের পাশাপাশি পরিচালক প্রেমেন্দু বিকাশ চাকী-রও ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভিকি। নিজের হাতে ভিকিকে চিত্রগ্রাহকের কাজও শিখেছিলেন তাঁর ‘চাকীদা’। প্রেমেন্দু বিকাশ চাকীকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল আজকাল ডট ইন। কিন্তু তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে, মেলেনি সাড়া।
