হঠাৎ করেই হুহু করে ওজন বাড়ছে? এদিকে জীবনযাপন বা খাওয়ায় বিশেষ পরিবর্তন আনেননি। ভাবছেন কী ঘটছে ঠিক? ওজন বাড়ার নেপথ্যে আপনার এই বদঅভ্যাস নেই তো? কম ঘুমানোর ফলে ওজন বৃদ্ধি পায় কিন্তু! ওজন বাড়বে না কমবে, এটা অনেকতাই নির্ভরশীল করে ঘুমের উপর। সম্প্রতি এই বিষয়ে জয়েন্ট কমিশন ইন্টারন্যাশনাল এবং ন্যাশনাল অ্যাক্রেডিশন বোর্ড ফর হসপিটাল স্বীকৃত হায়দরাবাদের একটি বেসরকারি হাসপাতালের তরফে একটি গবেষণা পত্রে জানানো হয়েছে কম ঘুম বা না ঘুমানো কীভাবে আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। এবং ওজন বৃদ্ধি করে। 

পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কী ঘটতে পারে? 

হজম, খিদে এবং এনার্জি লেভেল ভীষণভাবে নির্ভরশীল ঘুমের উপর। পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে, অতিরিক্ত চাপ পড়ে শরীরের উপর। আর সেই কারণে বেড়ে যেতে পারে কর্টিসল হরমোন। আর এই হরমোন শরীরে মেদ জমাতে সাহায্য করে, বিশেষ করে পেটে। অন্যদিকে কম ঘুমের কারণে এনার্জি লেভেল এমনই কম থাকে। সবটা মিলিয়ে একটা ক্লান্তির আবেশ যেন ঘিরে থাকে। 

কম ঘুমানোর কারণে হরমোনাল ইমব্যালেন্স হতেই পারে। বিশেষ করে যে হরমোনগুলো খিদে বাড়ায় বা কমায়, সেই ঘ্রেলিন এবং লেপ্টিন সোজাসুজি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। একদিকে ঘ্রেলিন খিদে বাড়ায়, অন্যদিকে লেপ্টিন মস্তিষ্কে সিগন্যাল পাঠায় যে পেট ভর্তি। যখন ঘুম হয় তখন প্রথম হরমোন বেড়ে যায়, আর দ্বিতীয়টি কমে যায়। 

এমনকী কম ঘুমানোর কারণে হজম ঠিকঠাক হয় না। এনার্জি পাওয়া যায় না। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিলে শরীর ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে জেগে থাকা মানেই অনেকেই ঘনঘন কফি, চা, খুচরো খাবার খেতে থাকেন। যা আদতে ওজন বাড়ায়। 

পর্যাপ্ত ঘুমালে সেটা যেমন ক্লান্তি দূরে রাখে, তেমনই খিদের হরমোনকে নিয়ন্ত্রণ করে, হজমে সাহায্য করে। ঘুম মাসল তৈরি থেকে কোনও আঘাত সারাতে ভীষণ সাহায্য করে। তাই দৈনিক ৮ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন ঘুম ভীষণই জরুরি। 

কিন্তু যাই করুন না কেন, কিছুতেই ঠিকঠাক ঘুম হচ্ছে না? কী করবেন তাহলে? এই সহজ কিছু টোটকা মেনে দেখতে পারেন। উপকার পাবেন। 

প্রথমত, ঘুমের একটা নির্দিষ্ট শিডিউল বানান যে এই সময়েই ঘুমাবেন। এমনকী সপ্তাহান্তেও এটা মেনে চলুন। 
ঘুমানোর আগে কখনই ভারী খাবার, চা, কফি খাবেন না। 

আপনার শোয়ার ঘর ঠান্ডা, অন্ধকার এবং শান্ত রাখুন। বেশি আওয়াজ, গরম জায়গায় ঘুম আসে না। 

ঘুমের আগে ফোন দেখার অভ্যাস ত্যাগ করুন। বরং প্রয়োজনে ধ্যান করা, গভীর শ্বাস নেওয়ার মতো কিছু জিনিস অভ্যাস করুন।