আজকাল ওয়েবডেস্ক: সম্পর্ক ভাঙনের অন্যতম বড় কারণ হলো একঘেয়েমি ও দূরত্ব। দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার পর অনেক দম্পতির মধ্যেই আগ্রহ কমে আসে, ঝগড়া বাড়ে কিংবা একে অপরকে আর নতুনভাবে আবিষ্কার করা যায় না। কিন্তু ব্রিটিশ যৌন বিশেষজ্ঞ অভ্রিনা উইন্টারস সম্প্রতি দাবি করেছেন, এমন এক নিষিদ্ধ যৌন অভ্যাস রয়েছে, যা নাকি সম্পর্কের এই দূরত্ব কমাতে কার্যকর হতে পারে।
উইন্টারসের মতে, দাম্পত্য সম্পর্কে উত্তেজনা ফিরিয়ে আনার একটি উপায় হলো cuckolding বা সঙ্গীকে অন্য কারও সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে দেখা। সমাজে এটি অনেক সময় ট্যাবু বা নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হলেও, বিশেষজ্ঞ মনে করেন—এটি আসলে সঙ্গীর সঙ্গে নতুন করে কথা বলার, লুকোনো ভয় ও ঈর্ষাকে প্রকাশ করার এবং সম্পর্ককে খোলামেলা করার এক অনন্য উপায়।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, যখন একজন স্বামী বা স্ত্রী এই অভিজ্ঞতায় অংশ নেয়, তখন তাদের ভেতরে থাকা ঈর্ষা বা অনিশ্চয়তা খোলাখুলি আলোচনার সুযোগ তৈরি করে। সম্পর্কের আসল সমস্যাগুলো সামনে আসে এবং দুজনই একে অপরের চাহিদা ও সীমা ভালোভাবে বুঝতে পারেন। এটি প্রতারণা নয়, কারণ সবকিছুই হয় পারস্পরিক সম্মতিতে। বরং এটি আস্থার পরীক্ষা—যেখানে একজন অন্যজনকে নতুনভাবে মূল্যায়ন করার সুযোগ পান।
উইন্টারস বলেন, অনেক সময় দম্পতিরা একে অপরকে নিয়ে কৌতূহল হারিয়ে ফেলেন। প্রতিদিনের রুটিন আর চাপের মধ্যে যৌনতা একঘেয়ে হয়ে যায়। তখন এ ধরণের নতুন অভিজ্ঞতা সম্পর্ককে চমক এনে দেয়, পুরনো আবেগ আবার জাগিয়ে তোলে। অনেক দম্পতি জানিয়েছেন, এ ধরনের অভিজ্ঞতার পর তারা নিজেদের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ বোধ করেছেন এবং যৌনজীবনেও নতুন প্রাণ পেয়েছেন।
অবশ্যই, এটি সবার জন্য নয়। উইন্টারস জোর দিয়ে বলেন, আগে কল্পনা বা ফ্যান্টাসি নিয়ে আলোচনা শুরু করা উচিত। এরপর যদি দুজনেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন, তবে ধীরে ধীরে সীমা ও নিয়ম তৈরি করে এগোনো যায়। কাউকে জোর করে বা লুকিয়ে এমন কিছু করলে তা প্রতারণা হিসেবেই ধরা হবে, আর সম্পর্ক ভাঙনের কারণও হতে পারে।
এই বিশেষজ্ঞের ভাষায়, “নিষিদ্ধ হলেও এটি কেবল যৌন খেলা নয়, বরং দম্পতির ভেতরের কথোপকথনের অনুঘটক। এটি মানুষকে নিজের ভেতরের লজ্জা ও ভয়ের মুখোমুখি হতে শেখায় এবং সঙ্গীর সঙ্গে নতুন বিশ্বাস গড়ে তোলে।”
অতএব, শোনায় যতই অদ্ভুত হোক না কেন, উইন্টারস বিশ্বাস করেন—সঠিকভাবে, সতর্কতার সঙ্গে এবং সম্মতিতে চেষ্টা করলে এই ট্যাবু অভ্যাসই হতে পারে ভাঙা সম্পর্ক জোড়া দেওয়ার এক আশ্চর্য পথ।
বিশেষজ্ঞ অভ্রিনা উইন্টারস মনে করেন, সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে সাহসী হতে হবে। তিনি বলেন, “অনেক সময় আমরা সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া ঠেকাতে অস্বস্তিকর বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলি না। কিন্তু এই ধরণের অভিজ্ঞতা দম্পতিদের মধ্যে সৎ আলোচনার সুযোগ করে দেয়।” তিনি আরও জানান, অনেকে প্রথমে অস্বস্তি বা লজ্জা পেলেও ধীরে ধীরে দেখেছেন এটি তাদের সম্পর্ককে আরও খোলামেলা করেছে। তবে সতর্ক করে তিনি বলেন, এটি যেন কোনো দম্পতির জন্য চাপের কারণ না হয়। যদি দুই পক্ষের মধ্যে একজনও রাজি না থাকেন, তবে কখনোই এটি চেষ্টা করা উচিত নয়। সম্মতি ছাড়া এমন কিছু করলে সম্পর্ক ভাঙাই অবশ্যম্ভাবী।
