আজকাল ওয়েবডেস্ক: ‘যদি থাকে নসিবে আপনি আপনি আসিবে’ এই বাক্যের এর চেয়ে ভাল উদাহরণ বোধহয় আর হতেই পারে না। জীবন মোটেই ভালো চলছিল না। ছিল না চাকরি, কিছুদিন আগেই ডিভোর্স দিয়ে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু এমন কুক্ষনেও যে ভাগ্য দেবতা মুচকি হাসছেন তা হয়তো বুঝতে পারেননি মাইকেল উইয়ারস্কি। ৫৪ বছর বয়সি মাইকেলের বরাবরের স্বভাব অল্প কিছু টাকার লটারি কেনার। সপ্তাহে প্রায় কুড়ি ডলারের মতো লটারির টিকিট কিনতেন তিনি। তবে কোনওদিনই সেই টিকিটে বিশেষ কিছু কপালে জোটেনি তাঁর। সপ্তাহ শেষে তেমনই অভ্যাসবশত দু’টি দু’ডলারের টিকিট কেটেছিলেন তিনি। মাইকেল জয়লাভ করেন ২৭৩ মিলিয়ন ডলারের জ্যাকপট।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
ঘটনাটি ২০১৯ সালের। তবে ইন্টারনেটের দৌলাতে এই ঘটনা ফের একবার উঠে এসেছে ইনস্টাগ্রাম এবং ফেসবুকের পাতায়। ঠিক কী হয়েছিল সেদিন? মাইকেল জানিয়েছেন, অভ্যাসবশতই টিকিট দু’টি কিনেছিলেন তিনি। কার্যত ভুলেই গিয়েছিলেন সেই টিকিটের কথা। পরদিন ফোনে কথা বলতে বলতে টেলিভিশন দেখার সময় হঠাৎ করেই তিনি লক্ষ্য করেন বিজয়ের তালিকায় তাঁর নাম। প্রথমে নিজের সৌভাগ্যের কথা বিশ্বাসই করতে পারেনি মাইকেল। শেষমেষ যখন তার হুঁশ ফেরে তখন ছুটে গিয়ে প্যান্টের পকেটে টিকিট দু’টি খুঁজতে জান তিনি। কিন্তু টিকিট খুঁজতে গিয়ে মাথায় হাত। মাইকেল দেখেন টিকিট দু’টি নেই সেখানে। যে টিকিটে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারেন হারিয়ে গিয়েছে সেগুলোই।
আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
তৎক্ষণাৎ টিকিটের দোকানে ছুটে যান তিনি। সৌভাগ্যবশত আগের দিন যে দোকানদারের কাছ থেকে তিনি টিকিটটি কিনেছিলেন তিনি সেখানে ডিউটি করছিলেন। মাইকেল তাঁকে গোটা ঘটনা খুলে বলেন, অভূতপূর্ব সততার পরিচয় দেন সেই ক্যাশিয়ারও। দু’জনে মিলে দোকান তন্নতন্ন করে খুঁজে বার করেন টিকিট দু’টি।
সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাইকেল বলেন, “আমি তো নিজের ভাগ্যে বিশ্বাসই করতে পারছিলাম না। বহু বছর ধরেই আমি লটারি কিনছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত দুই ডলারের বেশি ১ পয়সাও কোনওদিন জিতিনি।” পাশাপাশি ওই দোকানের ক্যাশিয়ার কেউ ধন্যবাদ দিয়ে তিনি বলেন, “আমার সৌভাগ্য যে দোকানদার একজন অত্যন্ত সৎ ব্যক্তি। আমি টিকিটগুলি হারিয়ে ফেলেছিলাম। তিনি যদি আমাকে সাহায্য না করতেন তাহলে এই লটারি আমি জিততে পারতাম না।” পাশাপাশি নিজের জয় করা অর্থের একটি অংশ তিনি ওই ব্যক্তিকে দেবেন বলেও প্রতিজ্ঞা করেন।
২৭৩ মিলিয়ন ডলার মানে ঠিক কত টাকা? এখনকার হিসাবে ভারতীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৩৮৪ কোটি টাকা। কী করবে না এত টাকা দিয়ে? মাইকেল জানান তার দুঃসময় অনেকেই ছেড়ে চলে গিয়েছে। প্রাক্তন স্ত্রীও তার মধ্যে একজন। এই কঠিন সময়ে পরিবারের যে মানুষরা তাঁর পাশে ছিলেন তাঁদের নিয়েই একটি পারিবারিক ব্যবসা গড়ে তুলতে চান তিনি।
যে দোকানদার টিকিট দু’টি খুঁজে দিতে সাহায্য করেছিলেন তার নাম ফিল ক্যামপুলো। তিনি তো চাইলেই সেই টিকিট দু’টি নিজে নিয়ে পুরো অর্থই দাবি করতে পারতেন। কেন করলেন না? কেন এই বিপুল অর্থ ফিরিয়ে দিলেন? মার্কিন সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ফিল বলেন, “আমার বাবা-মা আমাকে একজন সৎ নিষ্ঠাবান মানুষ হতে শিখিয়েছেন। আমি যা করেছি সেটা নৈতিকভাবে সঠিক কাজ এবং ভবিষ্যতেও এমন ঘটলে আমি এটাই করব।”
