বর্তমানে মাখানা যা ফক্স নাট অত্যন্ত পরিচিত সুপারফুড। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই পদ্মবীজ। পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ মাখানায় রয়েছে প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে আজকাল অনেকেই খাওয়া-দাওয়ার দিকে নজর দেন। ডায়েটে খাকাকালীন হালকা খিদে পেলে যেসব খাবারের উপর ভরসা রাখেন তা হল মাখানা। নিঃসন্দেহে পুষ্টিকর খাবার মাখানা। শরীরে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পুষ্টির জোগান দেয় এই খাবার। কিন্তু বেশি পরিমাণে মাখানা খেয়ে ফেললেই বিপদ। শরীরে দেখা দেবে একাধিক সমস্যা। স্বাস্থ্যকর হলেও মাখানা অতিরিক্ত খাওয়াও ঠিক নয়। এতে বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।

কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়াতে পারেঃ ইদানীং কোষ্ঠকাঠিন্যেের সমস্যা বেড়েছে। নেপথ্যে অনিয়ন্ত্রিত জীবনধারা, বাইরের খাবার খাওয়ার প্রতি ঝোঁক, শরীরচর্চার অভাব সহ আরও অনেক কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক খাবার ও কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বেশি মাখানা খেলে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে। কারণ ফাইবারের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। তাই যারা আগে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন, তাঁরা বুঝেশুনে মাখানা খান। 

আরও পড়ুনঃ বাড়বে না ওজন, জব্দ হবে ব্লাড সুগারের দাপাদাপি! সকালে সবচেয়ে সহজলভ্য এই ফলই খেলেই ডায়াবেটিসের খেলা শেষ

অজান্তেই বেড়ে যায় ক্যালোরিঃ মাখানাকে ‘গিল্ট-ফ্রি’ স্ন্যাক্স হিসেবে ধরা হয়, তাই অনেকেই বেশি পরিমাণে খান। ফলে অজান্তেই বেশি ক্যালোরি শরীরে প্রবেশ করে, যা ওজন নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে ব্যাহত করতে পারে। ওজন কমানোর ডায়েটে যত ইচ্ছে মাখানা খাওয়া মোটেই ঠিক নয়। 

কিডনি রোগীদের জন্য বিপজ্জনকঃ  আমাদের শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে একটি হল কিডনি। মূত্র থেকে শুরু করে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণ সহ একাধিক জরুরি কাজ একা হাতে সামলায় এই অঙ্গ। তাই সুস্থ থাকতে বৃক্কের হাল ঠিক রাখা জরুরি। মাখানায় পটাসিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই কিডনির সমস্যা বা ক্রনিক কিডনি ডিজিজে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে। কিডনি স্টোনের সমস্যা থাকলে মাখনার ধারকাছ দিয়েও যাওয়াও উচিত নয়। 

ব্লাড সুগার বাড়ায়: আজকাল অল্প বয়সিদের শরীরেও হানা দিচ্ছে ডায়াবেটিস। তাই খাওয়াদাওয়ায় সতর্ক থাকা জরুরি। মাখনায় শর্করার পরিমাণ খুব কম থাকে। তবে রোজ খুব বেশি মাখানা খেলে শরীরে শর্করার পরিমাণ আচমকা বেড়ে যেতে পারে। বিশেষ করে চিনি মিশিয়ে মাখানা গেলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

অ্যালার্জি: অনেকের বেশি মাখানা খেলে অ্যালার্জির ঝুঁকি রয়েছে। চুলকানি, ফোলাভাব বা ত্বকের অন্য কোনও সমস্যাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ড্রাই ফ্রুটসে অ্যালার্জি থাকলে মাখনা খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকুন।

আরও পড়ুনঃ ওষুধ-থেরাপি নয়, মাত্র ৪০ মিনিটে কয়েকটা পাতাই গায়েব করবে দুশ্চিন্তা-অবসাদ! প্রায় সকলের বাড়িতে থাকে এই 'জাদু গাছ'

ডিহাইড্রেশন: অতিরিক্ত পরিমাণে মাখানা খেলে শরীরের শুষ্ক ভাব দেখা দিতে পারে। শরীরে জলের ঘাটতি হলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যায় ভুগতে পারেন।

হৃদরোগের ঝুঁকি: নুন দিয়ে মাখনা খেলে ব্লাড প্রেশার বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনের কারণে ঝুঁকি বাড়ে হৃদরোগের। তাই পরিমিত পরিমাণে মাখনা খাওয়া উচিত।