আজকাল ওয়েবডেস্ক: চাকরির বাজারে টিকে থাকতে হলে প্রথম ছাপটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ — আর সেই প্রথম ছাপটি তৈরি হয় আপনার সিভি দিয়ে। অনেক সময় আমরা ভাবি, শুধু ডিগ্রি আর অভিজ্ঞতাই যথেষ্ট। কিন্তু বাস্তবে, একজন চাকরিদাতা সিভি দেখেই সিদ্ধান্ত নেন আপনি সাক্ষাৎকারের উপযুক্ত কি না। তাই সিভি তৈরির সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মাথায় রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। আপনার কাজের অভিজ্ঞতার মধ্যে যদি কিছু সময়ের গ্যাপ থাকে — যেমন ছয় মাস বা এক বছর বেকার থাকা — তবে সেটা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। কারণ, অধিকাংশ মানবসম্পদ বিভাগের দৃষ্টিতে এসব ফাঁকফোকর অস্বস্তিকর এবং সন্দেহজনক মনে হতে পারে।

এছাড়া, শুধুমাত্র আপনি কোন বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন বা আপনার ডিগ্রি কতটা ভালো, সেটা সবসময় মুখ্য নয়। আজকের চাকরির বাজারে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আপনার যোগাযোগ স্থাপনের দক্ষতা — অর্থাৎ আপনি কতটা দক্ষভাবে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারেন, টিমের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, সেটাই দেখা হয় বেশি। সিভিতে ব্যবহৃত ইমেইল আইডির বিষয়েও সতর্ক হওয়া জরুরি। এমন অনেকেই আছেন যারা এখনো 'cuteboy', 'rockstar', 'princess' জাতীয় আইডি ব্যবহার করে থাকেন — যা একেবারেই অপেশাদার। একটি প্রফেশনাল ইমেইল আইডি আপনার সজ্জনতা ও পরিপক্বতার প্রমাণ দেয়।

আর বয়স যদি ৫০ বা তারও বেশি হয়, কিংবা আপনি কোনও উচ্চপদে আবেদন করছেন, তাহলে সিভিতে এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের উল্লেখ একেবারেই অনাবশ্যক। সেই জায়গায় আপনার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও কৃতিত্ব তুলে ধরাই বুদ্ধিমানের কাজ। সিভির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে কাজের অভিজ্ঞতা। নিয়োগকর্তারা সাধারণত এই অংশটিই সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে পড়েন। তাই এখানে স্পষ্ট, প্রাসঙ্গিক এবং পরিমিত তথ্য দেওয়া উচিত — যা আপনার দক্ষতা ও পেশাগত মান তুলে ধরে।

একই সিভি সব প্রতিষ্ঠানে পাঠানো ভুল। বরং যেই পদের জন্য আবেদন করছেন, সেই পদের প্রয়োজন অনুযায়ী সিভি সামান্য হেরফের করুন, যেন সেটি ঠিকঠাকভাবে আপনার প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করতে পারে। আর সর্বশেষ ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় — সিভির দৈর্ঘ্য। নতুনদের ক্ষেত্রে এক পাতাই যথেষ্ট। আর আপনি যদি অভিজ্ঞ হয়ে থাকেন, তাহলে দুই পাতায় সীমাবদ্ধ থাকাই শ্রেয়। তার বেশি হলে তা একঘেয়ে ও অপ্রয়োজনীয় তথ্যপূর্ণ হয়ে যেতে পারে।

শেষ কথা, সিভি হল আপনার পেশাগত জীবনচিত্র — এটিকে যত যত্ন নিয়ে গড়বেন, ততই বাড়বে আপনার সম্ভাবনা।