আজকাল ওয়েবডেস্ক: এ বার আর শুধু পেট সাফাই নয়, স্বাস্থ্যেরও খেয়াল রাখবে শৌচাগার! মলের মাপ-রঙ-ঘনত্ব মেপে শরীর কেমন আছে তা নিজেই বলে দেবে কমোড। এমনই কমোড আবিষ্কৃত হয়েছে জাপানে। শৌচাগারের কাজ শুধু শরীরকে বর্জ্যমুক্ত করা নয়, স্বাস্থ্যের হাল-হকিকত জানানোও বটে-এই যুক্তিতেই নতুন এই পায়খানার প্যান বাজারে আনছে জাপানের বিখ্যাত টয়লেট সামগ্রী প্রস্তুতকারী সংস্থা টোটো লিমিটেড। চলতি বছরের অগস্ট মাসেই তারা বাজারে আনছে এমন এক বিশেষ কমোড, যা ব্যবহারকারীর মলের পরিমাণ, ঘনত্ব, রং এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করতে সক্ষম।
জাপানে এই ধরনের প্রযুক্তি এই প্রথম। সংস্থা সূত্রে খবর, টয়লেট বোলের ভিতরে বসানো একটি স্ক্যানার এই কাজটি করবে। ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে থাকা একটি বিশেষ অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিদিন মলের পরিস্থিতি সম্পর্কে খুঁটিনাটি তথ্য পাওয়া যাবে। স্বাস্থ্য-সচেতন ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখেই এই অত্যাধুনিক শৌচাগারটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: শুক্রাণু দান করে কত টাকা আয় হয়? ভারতে বীর্য দাতা হতে গেলে কোন কোন নিয়ম জানতে হবে?
আরও পড়ুন: লাবুবু ঘিরে বাড়ছে আতঙ্ক! পুতুল, নাকি শয়তানের দূত? ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় সন্ত্রস্ত বলি নায়িকাও
কীভাবে কাজ করবে এই কমোড?
টয়লেট বোলের ভিতরে যেখান থেকে উষ্ণ জল বেরোয়, তার পাশেই একটি সেন্সর মডিউল বসানো থাকছে। এর কার্যপ্রণালী অনেকটা বারকোড স্ক্যানারের মতো। ব্যবহারকারীর মল নীচে পড়ার সময় সেন্সর থেকে একটি আলো সেটির উপর ফেলা হবে, যা তার বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পরিমাপ করে। ব্যবহারকারী সিটে বসলেই স্ক্যানারের ঢাকনা খুলে যায় এবং সেটি সক্রিয় হয়ে ওঠে। মাপামাপির পরে তথ্য সরাসরি ব্যবহারকারীর স্মার্টফোনে থাকা বিশেষ অ্যাপে চলে যায়।
অ্যাপের কেরামতি
এই ব্যবস্থা মলকে সাতটি আকার ও ঘনত্বে ভাগ করে, যেমন- দানাদার, কলার মতো বা তরল। এ ছাড়াও, মলের উপরিভাগের প্রকৃতি বিচার করে তাকে তিনটি রঙের শ্রেণিতে (গেরুয়া, বাদামি বা গাঢ় বাদামি) ভাগ করা হয়। মলের পরিমাণকেও বেশি, মাঝারি বা কম, এই তিন ভাগে দেখানো হয়। অ্যাপটি এই সমস্ত তথ্য একটি ক্যালেন্ডারের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে দেখায়, যার ফলে তিনি নিয়মিত নিজের শারীরিক অবস্থার উপর নজর রাখতে পারেন। শুধু তাই নয়, মলের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে অ্যাপটি ব্যবহারকারীকে জীবনযাত্রা সংক্রান্ত ব্যক্তিগত পরামর্শও দেবে বলে দাবি নির্মাতা সংস্থার।
টোটো-র করা একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, ৭৬ শতাংশ মানুষ মলত্যাগের পর নিজেদের মল পরীক্ষা করেন, কিন্তু সেই বিশ্লেষণ করা বা বৈজ্ঞানিকভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এই কমোড সেই কাজটিই করবে।
১৯৮০ সালে প্রথম ‘ওয়াশলেট’ বিডেট সিট বাজারে আনার পর থেকে টোটো পরিচ্ছন্নতা, আরাম এবং জল সাশ্রয়ের মতো বিষয়ে ক্রমাগত নতুন প্রযুক্তি এনেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে সংস্থাটি গ্রাহকদের স্বাস্থ্যের দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে। আর সেই পথেই একটি দৃঢ় পদক্ষেপ এই অত্যাধুনিক কমোড।
আগামী ১ অগস্ট থেকে টোটো-র উচ্চমানের ‘নিওরেস্ট’ মডেলের সঙ্গে এই নতুন মল বিশ্লেষণ ব্যবস্থাটি যুক্ত হবে। মল বিশ্লেষণকারী ‘এলএস-ডব্লিউ’ মডেলের দাম শুরু হচ্ছে ৫,৪২,৩০০ ইয়েন (প্রায় ৩,৬৫০ ডলার) থেকে এবং ‘এএস-ডব্লিউ’ মডেলের দাম শুরু হচ্ছে ৪,৯৩,৯০০ ইয়েন (প্রায় ৩,৩৩০ ডলার) থেকে। সংস্থাটির লক্ষ্য, বাজারে আসার তৃতীয় বছরের মধ্যে বার্ষিক ৭,৩০০টি কমোড বিক্রি করা।