আজকাল ওয়েবডেস্ক: নচিকেতার বৃদ্ধাশ্রম গানটি একসময় নাড়া দিয়ে গিয়েছিল আপামর বাঙালিকে। বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের দুরত্ব কি সত্যিই জীবনযাত্রার বাস্তব? একথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে জীবনযাত্রার গতি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্বও। কাজের চাপে অনেকেই বাবা মাকে সময় দিতে পারেন না। ওদিকে তাঁদের ক্রমশ গ্রাস করে বার্ধক্য। কিন্তু তার মানে এই নয় যে সচেতন ভাবেই তাঁদের ঠেলে দিতে হবে দূরে।  বরং এমন বেশ কিছু কাজ আছে যেগুলি বাবা মায়ের সঙ্গে একত্রে করলে পারিবারিক বন্ধন যেমন মজবুত হয়, তেমনই বয়স বাড়লেও সুস্থ থাকেন বাবা-মা।

চিকিৎসকরাও এখন বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বার্ধক্যে পৌঁছলেও চনমনে থাকা কতটা জরুরি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শরীর দুর্বল হতে শুরু করে। অল্প বয়সে শরীর যত তাড়াতাড়ি ক্ষয় থেকে নিজেকে পুনর্গঠিত করতে পারে, বয়স বাড়লে সেটা করা সম্ভব হয় না। তবু অনেক না থাকার মধ্যেও শরীর চনমনে থাকলে পেশী ক্ষয় হওয়ার হার কিছুটা হলেও কমে, হাড়ের ঘনত্ব বজায় থাকে, শরীরের ভারসাম্য ঠিক থাকে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। শরীরের মতোই গুরুত্বপূর্ণ মানসিক স্বাস্থ্যও। একাকিত্ব এবং নিষ্ক্রিয়তা বয়স্কদের মধ্যে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং স্মৃতিভ্রংশের মতো সমস্যা বাড়াতে পারে। চনমনে থাকলে মন প্রফুল্ল থাকে, নতুন কিছু শেখার আগ্রহ বাড়ে এবং স্মৃতিশক্তি ভাল থাকে।

কীভাবে বয়স্ক বাবা-মাকে চনমনে রাখা যায়?
১। হালকা ব্যায়াম
বয়স অনুসারে এবং শারীরিক ক্ষমতা অনুযায়ী হাঁটাহাটি, যোগাভ্যাস, তাই চি বা হালকা স্ট্রেচিংয়ের মতো ব্যায়াম করতে উৎসাহিত করুন বাবা-মাকে। এতে শরীর ফিট থাকবে। এতে অস্থিসন্ধির ব্যথা কমে। শরীরে ফিল গুড হরমোনের পরিমাণ বাড়ে। যদি কোমরে সমস্যা থাকে তবে সুইমিং পুলেও ব্যায়াম করতে বলতে পারেন। 

আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
২। নতুন শখ
বাবা মা হয়তো আপনাকে সংসারের চাপে নিজেদের অনেক শখ আহ্লাদ পূরণ করতে পারেননি। তাঁদের সেই পছন্দের কাজগুলিতে উৎসাহ দিন। বাগান করা, বই পড়া, গান শোনা, ছবি আঁকা বা অন্য কোনও শখের প্রতি উৎসাহিত করুন।

৩। সামাজিক যোগাযোগ
বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন বা সমবয়সীদের সঙ্গে দেখা করার বা কথা বলার সুযোগ করে দিন। বাবা মাকে স্থানীয় সামাজিক ক্লাব বা বয়স্কদের জন্য তৈরি কোনও সংগঠনে যোগ দিতে উৎসাহিত করতে পারেন।

৪। প্রযুক্তির ব্যবহার
আজকালকার অনেক ছেলে মেয়েই বাবা-মাকে আধুনিক প্রযুক্তি শেখাতে আগ্রহী নন। আরে মশাই আপনি যখন শিশু ছিলেন তাঁরা আপনাকে চামচ ব্যবহার করতে শিখিয়েছেন। এখন তাঁদের প্রযুক্তি শেখানোর ধৈর্যটুকু না দেখালে চলবে কেমন করে? বরং মা বাবাকে একটু সময় নিয়ে মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট বা কম্পিউটারের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করা শেখান। এর মাধ্যমে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে অনলাইনে যুক্ত থাকতে পারবেন এবং বিভিন্ন বিনোদনমূলক বা শিক্ষামূলক কনটেন্ট দেখতে পারবেন।

আরও পড়ুন: পাড়ার বৌদিদের অন্তর্বাস চুরি একের পর এক! চোরকে সামনে পেয়ে এ কী করলেন মহিলারা?
৫। একসঙ্গে সময় কাটানো
বৃদ্ধ মা বাবাকে দেওয়ার মতো সবচেয়ে ভাল উপহার সময়। ছেলে মেয়ে যতই বড় হোক, দূরে থাকলে সব বাবা মা দুশ্চিন্তা করেন। চোখের সামনে দেখতে পেলে শান্তি পান। তাই অফিস থেকে ফিরে অল্প কিছুক্ষণ হলেও গল্প করুন, তাঁদের কথা শুনুন এবং তাঁদের অনুভূতি বোঝার চেষ্টা করুন। একসঙ্গে কাটানো এই সময়টুকুই তাঁদের মানসিক শান্তি এনে দেবে।