আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে পেশাগত জীবন থেকে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, সব ক্ষেত্রেই সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি হল সঠিক কমিউনিকেশন স্কিল বা মানুষের সঙ্গে আলাপ জমানোর দক্ষতা। অনেকেরই ধারণা, ভাল কথা বলার ক্ষমতা জন্মগত। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এটি আদতে একটি শিল্প, যা নিয়মিত অনুশীলন ও চেষ্টার মাধ্যমে রপ্ত করা সম্ভব। কার্যকর কথোপকথনের অর্থ শুধু সুন্দর করে কথা বলা নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে নিজের ভাবনাকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করা, অন্যের কথা মন দিয়ে শোনা এবং শরীরী ভাষার সঠিক ব্যবহার।

 

কীভাবে নিজের কমিউনিকেশন স্কিল আরও উন্নত করবেন? রইল কিছু জরুরি পরামর্শ।

১। যোগাযোগের প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল মন দিয়ে শোনা। ভাল বক্তা হওয়ার আগে ভাল শ্রোতা হওয়া প্রয়োজন। যখন কেউ কথা বলছেন, তখন তাকে বাধা না দিয়ে তার কথা শেষ করতে দিন। তিনি কী বলতে চাইছেন, তা বোঝার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে তার কথা শেষে প্রশ্ন করুন। এর মাধ্যমে কেবল তার প্রতি সম্মানই জানানো হয় না, বিষয়টি সম্পর্কে আপনার ধারণাও স্বচ্ছ হয়।

২। নিজের বক্তব্যকে যতটা সম্ভব সহজ, স্পষ্ট এবং সংক্ষিপ্ত রাখুন। অপ্রয়োজনীয় তথ্য বা কঠিন শব্দ ব্যবহার করে বিষয়টিকে জটিল করে তুলবেন না। কথা বলার আগে মনে মনে গুছিয়ে নিন কী বলতে চান। মূল বিষয়ের উপর আলোকপাত করুন। এতে শ্রোতার পক্ষে আপনার কথা বোঝা সহজ হবে এবং আপনার বার্তাটিও কার্যকরভাবে তার কাছে পৌঁছবে।

 

৩। যোগাযোগের একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে শরীরী ভাষা বা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ। কথা বলার সময়ে আপনার অঙ্গভঙ্গি, দাঁড়ানোর বা বসার ধরন, চোখের ভাষা- এই সবকিছুই আপনার আত্মবিশ্বাসের পরিচয় দেয়। শ্রোতার চোখে চোখ রেখে কথা বলুন। সোজা হয়ে দাঁড়ান বা বসুন। কথা বলার সময় অহেতুক নড়াচড়া বা হাত-পা নাড়ানো এড়িয়ে চলুন। ইতিবাচক কথা বলার সময় মৃদু হাসি, অনুপ্রেরণা মূলক কথা বলার সময় মুষ্ঠিবদ্ধ হাত অনেক সময় ভাল বার্তা দেয়।

 

৪। যে কোনও আলোচনায় অন্যের দৃষ্টিকোণ বোঝার চেষ্টা করুন। নিজেকে তার জায়গায় রেখে ভাবলে পরিস্থিতি অনুধাবন করা সহজ হয়। যদি কারও সঙ্গে আপনার মতের অমিলও হয়, তার বক্তব্যকে সম্মান জানান। সহানুভূতিশীল মনোভাব বজায় রাখলে কঠিন আলোচনাও অনেক মসৃণ হয়ে যায়।

 

৫। যে কোনও দক্ষতার মতোই, নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে কমিউনিকেশন স্কিলও আরও উন্নত করা যায়। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার অভ্যাস করুন। বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনার আয়োজন করতে পারেন। বই পড়া, বিভিন্ন বিষয়ে সিনেমা বা তথ্যচিত্র দেখা আপনার জ্ঞানের পরিধি বাড়াবে, যা কথা বলার সময় আপনাকে আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। ভুল করতে ভয় পাবেন না। প্রতিটি ভুলই নতুন কিছু শেখার সুযোগ করে দেয়।

 

মনে রাখবেন, উন্নত কমিউনিকেশন স্কিল কেবল কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির সিঁড়ি নয়, এটি আপনাকে ব্যক্তিগত জীবনেও আরও বেশি জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য করে তোলে। তাই আজ থেকেই এই বিষয়ে সচেতন হন এবং অনুশীলনের মাধ্যমে নিজেকে আরও দক্ষ করে তুলুন।