আজকাল ওয়েবডেস্ক: আকাশে পেঁজা তুলোর মতো মেঘ, বাতাসে শিউলির গন্ধ আর ছুটির মেজাজ- দুর্গাপুজো মানেই বাঙালির মনে উৎসবের পাশাপাশি ভ্রমণের হাতছানি। শহরের কোলাহল থেকে দূরে প্রিয়জনকে নিয়ে ফাঁকা রাস্তায় লং ড্রাইভে বেরিয়ে পড়ার পরিকল্পনা করছেন অনেকেই। তবে এই আনন্দ সফরের আগে গাড়ির খরচ সংক্রান্ত কিছু বিষয় মাথায় না রাখলে উৎসবের মধ্যেই পকেটে টান পড়তে পারে। ঝঞ্ঝাটহীন এবং চিন্তামুক্ত যাত্রার জন্য তাই প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। সাধারণ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই অনেকটা খরচ কমিয়ে ফেলা যায় পুজোর মাসে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
১। জ্বালানি: লং ড্রাইভের সবচেয়ে বড় খরচ হল জ্বালানি। যাত্রা শুরুর আগে মোট দূরত্বের একটা হিসেব কষে নিন। গুগল ম্যাপসের সাহায্যে সহজেই মোট কিলোমিটার জানা যায়। এরপর আপনার গাড়ির মাইলেজ (প্রতি লিটারে কত কিলোমিটার যায়) অনুযায়ী মোট কত লিটার তেল লাগবে, তার একটা আনুমানিক হিসাব করুন। বর্তমান পেট্রোল বা ডিজেলের দাম অনুযায়ী মোট খরচের অংকটা বেরিয়ে আসবে। তবে মনে রাখবেন, পাহাড়ি রাস্তা বা যানজটের কারণে মাইলেজ কমতে পারে, তাই প্রাথমিক হিসাবের চেয়ে দশ থেকে পনেরো শতাংশ জ্বালানি বেশি লাগবে ধরে এগোনোই বুদ্ধিমানের কাজ। পাশাপশি, ট্রাফিক সিগন্যাল না জ্যামে আটকে পড়লে গাড়ির ইঞ্জিন বন্ধ রাখার অভ্যাস করুন। পুজোর সময় রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে হতে পারে। এই সময় অকারণে ইঞ্জিন চালু রাখলে অতিরিক্ত তেল পুড়বে।
২। টোল এবং অন্যান্য কর: জাতীয় সড়ক বা এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করলে টোল ট্যাক্স একটি আবশ্যক খরচ। যাত্রা শুরুর আগে FASTag রিচার্জ করে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় অনলাইন ম্যাপ আপনাকে আনুমানিক টোল খরচ দেখিয়ে দেয়, যা বাজেট তৈরির জন্য সহায়ক। এছাড়া, কিছু রাজ্যে প্রবেশ করার জন্য আলাদা কর বা পারমিট লাগতে পারে। আপনি যেখানে যাচ্ছেন, সেই রুটে এমন কোনও নিয়ম আছে কি না, তা আগে থেকে জেনে নিন।
৩। সফরের আগের প্রস্তুতি: নিরাপদ যাত্রার জন্য সফরের আগে গাড়িকে প্রস্তুত করা আবশ্যক। এর জন্যে একটি আলাদা বাজেট বরাদ্দ করুন। ইঞ্জিন অয়েল, কুল্যান্ট, ব্রেক ফ্লুইড পরীক্ষা ও প্রয়োজনে পরিবর্তন করা, টায়ারের প্রেশার (স্পেয়ার হুইল সহ) এবং হুইল অ্যালাইনমেন্ট পরীক্ষা করানো জরুরি। এই ছোট খরচগুলি মাঝরাস্তায় বড় বিপদ এবং অপ্রত্যাশিত খরচ থেকে বাঁচাবে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
৪। জরুরি তহবিল: এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক। আগে থেকে যতই ছক কষে নিন। যাত্রাপথে সবকিছু পরিকল্পনা মতো না-ও হতে পারে। তাই একটি জরুরি তহবিল বা কনটিনজেন্সি ফান্ড সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। রাস্তায় টায়ার পাংচার হওয়া, ছোটখাটো যান্ত্রিক ত্রুটি বা হঠাৎ অসুস্থতার মতো পরিস্থিতির জন্য মোট বাজেটের অন্তত দশ শতাংশ অর্থ আলাদা করে রাখুন। এই টাকা নগদ এবং ডিজিটাল উভয় মাধ্যমেই রাখা ভাল। অনেক সময় রাস্তার পাশে ছোটখাটো গ্যারেজ থেকে গাড়ি মেরামত করার দরকার হতে পারে। সেখানে কিন্তু দেওয়া নেওয়া সাধারণ নগদেই হয়।
৫। খাওয়া-দাওয়া ও পার্কিং-এর খরচ: রাস্তার ধারের ধাবা বা রেস্তরাঁর খাবারের খরচ কিন্তু কম নয়। বারবার থেমে চা-কফি বা খাবার খেলে খরচ অনেকটাই বেড়ে যায়। অনেক সময় বিষয়টি তাৎক্ষণিক ভাবে বোঝা না গেলেও ভ্রমণ শেষে ধরা পড়ে। তাই কিছু শুকনো খাবার, স্ন্যাকস এবং জলের বোতল বাড়ি থেকে সঙ্গে করে নিয়ে নিন। এতে খরচ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে। পাশাপাশি, পর্যটন কেন্দ্র বা হোটেলের পার্কিং চার্জও একটি লুকানো খরচ। বিশেষত পুজোর ভিড়ে এই খরচ বাড়তে পারে, তাই এটিও হিসাবের মধ্যে ধরুন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, আগে থেকে সুন্দর পরিকল্পনা করলে তা যাত্রাকে আরও আনন্দময় করে তোলে। সঠিক বাজেট আপনাকে অপ্রয়োজনীয় খরচ থেকে বাঁচিয়ে চিন্তামুক্তভাবে উৎসবের ছুটি উপভোগ করার সুযোগ করে দেবে। আপনার পুজো এবং সফর, দুই-ই হবে আনন্দময়।
