সোশ্যাল মিডিয়া দেখে অনেকেই স্কিনকেয়ারের জিনিসপত্র কেনেন। কিন্তু বিউটি ইনফ্লুয়েন্সাররা যা বলেন, তা সব সময় ঠিক না-ও হতে পাকে। ত্বক–পরিচর্যার জগতে একটাই সত্য। অন্যের ত্বকে যা কাজ করে, তা আপনার ত্বকে একই ফল নাও দিতে পারে। বরং ভুল প্রোডাক্ট ত্বকে জ্বালা, পিগমেন্টেশন, ব্রণ বেড়ে যাওয়া কিংবা স্কিন ব্যারিয়ার নষ্ট করে আরও বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই নিজের ত্বকের প্রয়োজন বোঝা এবং সেই অনুযায়ী পণ্য বাছাই করাই সবচেয়ে জরুরি।

ত্বক বিশেষজ্ঞ ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট সার্জন ড. বি.এল. জানগিড় জানান, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে পাওয়া উপদেশ অন্ধভাবে মেনে চলাই বর্তমানে সবচেয়ে বড় ভুল। তিনি বলেন, “প্রতিটি মানুষের ত্বকের ধরন এবং সমস্যা আলাদা। ইনফ্লুয়েন্সারের রুটিন মতো ত্বক পরিচর্যা করলে অনেক সময় র‌্যাশ, ব্রণ বেড়ে যাওয়া, দাগ–ছোপ বা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হতে পারে।”

নিজের ত্বক সম্পর্কে অজ্ঞতা

ড. জানগিড়ের মতে, ত্বক সম্পর্কে সঠিক ধারণা না রেখে প্রোডাক্ট কেনা আরও একটি বড় ভুল। শুধু বিজ্ঞাপন দেখে বা ট্রেন্ড অনুসরণ করে কোনও ধরনের ক্রিম, রেটিনয়েড বা এই ধরনের উপাদান ব্যবহার করলে ত্বক উল্টে আরও সংবেদনশীল হয়ে পড়তে পারে। তিনি বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যালগরিদম আপনার ত্বকের চাহিদা বোঝে না। নিজে থেকেই ‘মিরাকল’ অ্যাসিড কিনে ব্যবহার করলে প্রত্যাশা পূরণ তো হয়ই না, বরং ত্বক আরও খারাপ হয়ে যায়।” তিনি পরামর্শ দেন, প্রয়োজনীয় উপাদান বুঝে ঠিক ট্রিটমেন্ট পেতে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।

হালকা সমস্যাকেও অবহেলা না করা

ডার্মাটোলজিস্টের মতে, সামান্য র‌্যাশ, শুষ্কতা বা চুলকানি—এসবকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এগুলো ত্বকের ভিতরে থাকা বড় কোনও সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “নিজে নিজে ওষুধ বা বিশেষ করে স্টেরয়েডযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয়। ভুল ব্যবহারে সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে।”

ট্রিটমেন্ট শুরু করেও না শেষ করা

ড. জানগিড় আরও জানান, অনেকে ঠিকভাবে ট্রিটমেন্ট না চালিয়ে মাঝপথেই বন্ধ করে দেন। এতে সমস্যা ফিরে আসে বা আরও জটিল হয়ে ওঠে। তাই নির্ধারিত চিকিৎসা শেষ করা এবং নিয়ম মেনে চলাই সুস্থ ত্বকের মূল ভিত্তি।

এই সতর্কতাগুলো মাথায় রাখলে নতুন বছরের স্কিনকেয়ার হবে আরও নিরাপদ, ফলপ্রসূ এবং আপনার ত্বকের প্রকৃত চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।