আজকাল ওয়েবডেস্ক: মনে পড়ে ম্যান অব স্টিল সিনেমায় হেনরি ক্যাভিলের পোশাকহীন ঊর্ধাঙ্গের কথা? শুধু কি হলি নায়ক? গরমকালে আপামর বাঙালির প্রিয় স্যান্ডো গেঞ্জি কিংবা বোতাম খোলা শার্টের ফাঁক দিয়েও উঁকি দেয় একরাশ লোম। পুরুষের বুকের এই কেশগুচ্ছ নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। এ কি নিছকই প্রকৃতির খামখেয়াল, নাকি এর নেপথ্যে লুকিয়ে আছে গভীরতর কোনও ইঙ্গিত? 

মানুষের গায়ের লোমকূপের সংখ্যাটা কিন্তু নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রায় একই। কিন্তু বয়ঃসন্ধির সময় পুরুষদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন, বিশেষ করে টেস্টোস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ হু হু করে বেড়ে যায়। একে অনেকে সেক্স হরমোনও বলেন। এই হরমোনের প্রভাবেই পুরুষের দাড়ি-গোঁফ গজায়, গলার স্বর ভারী হয় আর বুকের ছাতিতেও লোমের বিস্তার ঘটে।

জেনেটিক্স বা বংশগতিরও একটা বড় ভূমিকা আছে। বাবা-ঠাকুরদার বুকে যদি সিংহের কেশরের মতো লোম থাকে, তাহলে আপনার বুকেও যে তার কিছুটা ঝলক দেখা যাবে, তাতে আর আশ্চর্য কী!

এখন প্রশ্ন হল, এই লোমের কাজটা কী?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, এর পিছনে রয়েছে বিবর্তনের হাজার হাজার বছরের ইতিহাস। একসময় আমাদের পূর্বপুরুষদের সারা গা-ই ছিল লোমে ঢাকা। এই লোম তাঁদের রোদ-জল-ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচাত, অনেকটা আজকের দিনের জামাকাপড়ের মতো। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ জামাকাপড় পরতে শিখল, তাই সারা গায়ের লোমের প্রয়োজনীয়তাও কমল। কিন্তু পুরুষদের বুকের লোম রয়ে গেল কেন? এর পিছনে কয়েকটি মজার তত্ত্ব প্রচলিত আছে।

ফেরোমোন: বিজ্ঞানীদের একাংশের মতে, বুকের লোম আসলে ‘ফেরোমোন’ নামক এক বিশেষ গন্ধ ধরে রাখতে সাহায্য করে। এই গন্ধ বিপরীত লিঙ্গকে আকর্ষণ করার একটা সূক্ষ্ম কৌশল।
পৌরুষের বিজ্ঞাপন: অনেকেই আবার মনে করেন, বুকের লোম আসলে পৌরুষের একেবারে ফ্রন্টপেজ বিজ্ঞাপন। যেহেতু টেস্টোস্টেরনের প্রভাবে এই লোম গজায়, তাই এটি যেন শক্তি ও সামর্থের নীরব ঘোষণা।
ঘাম নিয়ন্ত্রণ: একদল বিজ্ঞানী আবার মনে করেন, বুকের লোম ঘাম শুষে নিয়ে তা বাতাসে ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করে। এর ফলে শরীর দ্রুত ঠান্ডা হয়। পুরুষরা যেহেতু শিকার করত তাই দৌড়ঝাঁপ করার জন্য এটি একপ্রকার প্রাকৃতিক ‘কুলিং সিস্টেম’ হিসাবে কাজ করতে। সেকারনেই হয়ত রয়ে গিয়েছে এই চুল।