আজকাল ওয়েবডেস্কঃ ভাজা-ভুজি থেকে তরকারি, বাঙালির নিরামিষ রান্নায় কালোজিরের অবদান অনস্বীকার্য। আমিষ রান্নাতেও রয়েছে এর বহু ব্যবহার। তবে শুধুই স্বাদবর্ধক নয়, কালোজিরের স্বাস্থ্য উপকারিতাও প্রচুর। প্রতি গ্রাম কালোজিরেতে রয়েছে নিয়াসিন, প্রোটিন, ভিটামিন বি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ফসফরাস, কপার, জিঙ্ক, ফেলাসিন। প্রাচীন যুগ থেকে কালোজিরেকে মহাঔষধি হিসাবে দেখা হয়। 

কালোজিরের তেল জয়েন্টের ব্যথা, বাত এবং পিঠের অস্বস্তির জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলির মধ্যে একটি। নাইজেলা স্যাটিভাতে সক্রিয় যৌগ থাইমোকুইনোন সমৃদ্ধ কালোজিরের তেল শক্তিশালী প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এটি দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, তরুণাস্থি ভাঙ্গন এবং জয়েন্ট শক্ত করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। 

 

আরও পড়ুনঃ ফুচকা, আলুকাবলির সঙ্গে তো দিব্যি খান! শুধু স্বর্গীয় স্বাদ নয়, স্বাস্থ্যগুণে অতুলনীয় এই জলের এত উপকারিতা জানতেন?

 

কালোজিরের তেল জয়েন্টের ফোলাভাব কমাতে, গতিশীলতা উন্নত করতে এবং তরুণাস্থি ক্ষয় থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। অস্টিওআর্থারাইটিস, ক্ষয়জনিত হাঁটুর ব্যথা, অথবা পিঠের নিচের অংশ শক্ত হয়ে যাওয়ার সমস্যাতেও নিয়মিত কালোজিরের তেল লাগালে উপকার পাবেন। 

সাম্প্রতিক ক্লিনিকাল গবেষণা আর্থ্রাইটিস এবং জয়েন্টের সমস্যার চিকিৎসায় কালোজিরের থেরাপিউটিক সম্ভাবনার জোর দিয়েছে। এটির সক্রিয় যৌগ থাইমোকুইনোনের প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত লক্ষণগুলি উপশম করতে পারে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগীদের নিয়ে একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আট সপ্তাহ ধরে যারা ওষুধের সঙ্গে প্রতিদিন ১ হাজার মিলিগ্রাম কালোজিরা খেয়েছেন তাঁদের রোগের ভয়াবহতা এবং ব্যথার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছে। শুধু কালো জিরেই নয়, এর তেলও শারীরিক নানা সমস্যা সমাধানে কাজে আসে। ক্রনিক মাথা যন্ত্রণা মাইগ্রেনের সমস্যা থাকলে কালো জিরের তেল কপালে মালিশ করলে আরাম পাওয়া যায়।

এছাড়াও কালোজিরের আরও অনেক উপকারিতা রয়েছে। সর্দি-কাশি রুখতে কালো জিরে দিয়ে ঘরোয়া চিকিৎসা নতুন কিছু নয়। একটি পরিষ্কার কাপড়ে কালো জিরে জড়িয়ে তা নাকের কাছে নিয়ে গিয়ে বড় করে শ্বাস টানুন কিছু ক্ষণ ধরে। এর ঝাঁজ বুকে জমে থাকা শ্লেষ্মাকে টেনে বার করতে সাহায্য করে। নাক বন্ধের সমস্যাতেও ঘরোয়া এই উপায়ের জুড়ি মেলা ভার।

অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট পরিপূর্ণ কালোজিরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। কালোজিরের দানা থেকে তৈরি তেল কোলেস্টোরেল কমাতে পারে এবং দেহের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা কমিয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এই দানা। কালোজিরে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুব ভাল কাজ। এমনকী গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্যানসার প্রতিরোধেও কালোজিরে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

ক্রনিক পেটের সমস্যায় কাজে আসে এই মশলা। কালো জিরে শুকনো খোলায় ভেজে গুঁড়ো করে নিন। এ বার আধ কাপ ঠান্ডা করা দুধে এই কালো জিরে এক চিমটে মিশিয়ে খালিপেটে খান প্রতি দিন। দুধ ঠান্ডা হওয়ায় বদহজমও হবে না, উল্টে পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে কালো জিরের দৌলতে।

শ্বাসকষ্টের সমস্যা হঠাৎ মুশকিলে ফেললে সব সময় চিকিৎসকের সরণ নেওয়ার অবস্থা থাকে না। অনেক সময় হাতের কাছে মজুত থাকে না দরকারি ওষুধও। কালো জিরে রাখুন কাপড়ে জড়িয়ে। এ বার নাকের কাছে নিয়ে গন্ধ শুঁকুন এর। শ্বাসকষ্টের কষ্ট থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে পারে এই ঘরোয়া উপায়।