আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রীষ্মের প্রখর তাপে যখন তৃষ্ণার্ত প্রাণ একটু শীতলতার পরশ চায়, তখন মাটির কলসির জল এক অসাধারণ তৃপ্তি এনে দেয়। যুগ যুগ ধরে এমনটাই চলে এসছে। কালের নিয়মে প্রচলন কমলেও মাটির পাত্রে জল সংরক্ষণের এই প্রাচীন পদ্ধতি কিন্তু পুরোপুরি গ্রহণযোগ্যতা হারায়নি। এর কারণ শুধু ঐতিহ্য নয়, বরং এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একাধিক স্বাস্থ্যগত উপকারিতা।
১. স্বাভাবিক শীতলীকরণ ও তৃপ্তি
মাটির পাত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হল এটি জলকে প্রাকৃতিকভাবে ঠান্ডা রাখে। মাটির কলসির গায়ে থাকা অসংখ্য ক্ষুদ্র ছিদ্র দিয়ে সামান্য জল চুঁইয়ে বাইরে আসে এবং বাষ্পীভূত হয়। এই বাষ্পীভবনের ফলে ভিতরের জলের তাপমাত্রা কমে যায়, যা পরিবেশের তাপমাত্রার চেয়ে বেশ খানিকটা শীতল, কিন্তু ফ্রিজের জলের মতো অতিরিক্ত ঠান্ডা নয়। এই স্বাভাবিক শীতল জল গরমে তৃষ্ণা মেটানোর পাশাপাশি গলা এবং শরীরের জন্যেও আরামদায়ক। হঠাৎ করে খুব ঠান্ডা জল পান করলে যে সর্দি-কাশি বা গলা ব্যথার ঝুঁকি থাকে, মাটির পাত্রের জলে তা অনেকটাই কম।
২. ক্ষারীয় গুণ ও উন্নত হজম
মাটির পাত্রে জল রাখলে জলের অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য বজায় থাকে। মাটির ক্ষারীয় প্রকৃতির সংস্পর্শে এসে জলও সামান্য ক্ষারীয় গুণপ্রাপ্ত হয়, যা শরীরের অম্লত্ব কমাতে সাহায্য করে। এটি অ্যাসিডিটি এবং হজম সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধে সহায়ক। এছাড়া, মাটির পাত্রে সংরক্ষিত জলে কোনও প্রকার রাসায়নিক মেশার সম্ভাবনা থাকে না, যা প্লাস্টিকের বোতলের ক্ষেত্রে একটি উদ্বেগের কারণ। ফলে, পরিপাকতন্ত্র সুস্থ রাখতে মাটির পাত্রের জল একটি উৎকৃষ্ট বিকল্প।
৩. খনিজ সমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর
কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, মাটির পাত্রে জল রাখলে তাতে কিছু উপকারী খনিজ ও ইলেক্ট্রোলাইট মিশে যায়, যা মানব শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। এই খনিজ উপাদানগুলি জলের স্বাদ বৃদ্ধি করার পাশাপাশি শরীরের ক্লান্তি দূর করতে এবং গরমে শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করে। প্লাস্টিকের পাত্রে জল রাখলে যেখানে ক্ষতিকারক রাসায়নিক মিশে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেখানে মাটির পাত্র সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর। এটি জলের পুষ্টিগুণ অক্ষুণ্ণ রেখে শরীরকে প্রয়োজনীয় উপাদান সরবরাহ করতে পারে।
