আজকাল ওয়েবডেস্ক: চীন আবারও এমন এক প্রযুক্তিগত সাফল্য অর্জন করেছে যা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
দেশটির একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে এমন এক স্মার্টফোন, যা শুধু মোবাইল ফোনেই সীমাবদ্ধ নেই, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ এআই স্মার্ট এজেন্ট।
ডিভাইসটির নাম Nubia M153। জেডটিই (ZTE) এবং টিকটকের মূল প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স (ByteDance) যৌথভাবে এটি তৈরি করেছে বলে জানানো হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই ফোনটি শুধু নির্দেশ শুনেই কাজ করে না, বরং নিজের মতো করেই কাজ সম্পন্ন করে। কথা বুঝতে পারে, নিজেই অ্যাপ খুলে, পেমেন্ট করে, হোটেল বুকিং থেকে শুরু করে নানা কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে শেষ করে ফেলে।
প্রয়োজন হলে অন্যান্য রোবট বা ডিজিটাল সার্ভিসের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারে। অনেকেই এটিকে বিশ্বের প্রথম পূর্ণস্বয়ংক্রিয় এআই ফোন হিসেবে আখ্যা দিচ্ছেন।
এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ফোনটির পুরো সিস্টেমে ইন্টিগ্রেট করা হয়েছে বাইটড্যান্সের শক্তিশালী ডৌবাও এআই। জানা গিয়েছে, এটি কোনও সাধারণ ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট নয়।
এই এআই পরিষেবা স্ক্রিনে কী চলছে তাও বুঝতে পারে। ব্যবহারকারীর নির্দেশ যেমন, ‘হোটেল দরকার’ বা ‘একটা ড্রিঙ্ক চাই’ শোনার পর ফোনটি নিজেই ঠিক করতে পারবে কোন অ্যাপ খুলতে হবে, কীভাবে কাজটি সম্পন্ন করতে হবে এবং কোন সার্ভিস ব্যবহার করতে হবে।
শেনজেনের এক ব্যবসায়ী টেইলর ওগান ফোনটির একটি লাইভ ডেমো দেখান। তিনি ফোনকে শুধু বলেন, হাসপাতালে লাইনে দাঁড়ানোর জন্য কাউকে দরকার।
সঙ্গে সঙ্গে ফোন নিজেই সঠিক অ্যাপ খুঁজে বের করে, লোকেশন দেয়, মূল্য নির্ধারণ করে এবং বুকিং সম্পন্ন করে। টেইলর জানান, তিনি নিজেই জানতেন না কোন অ্যাপ কাজটি করছে, কিন্তু ফোনটি সবকিছু স্বয়ংক্রিয়ভাবে করে ফেলেছে।
এমনকী ফোনটি নিজে থেকেই ট্যাক্সিও বুক করতে পারে। এটি ব্যবহারকারীর লোকেশন নজরে রাখে, কোন ট্যাক্সি সার্ভিস উপলব্ধ, কোন অ্যাপ ব্যবহার করতে হবে, সব নিজেই ঠিক করে।
ব্যবহারকারীর লোকেশন পরিবর্তন হলে ফোন নতুন করে অ্যাপ খুলে সেই অনুযায়ী অপারেট করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
ডিভাইসটিতে দুটি এআই ‘ব্রেইন’ ব্যবহার করা হয়েছে। ডৌবাও এআই-টি মূলত সিদ্ধান্ত নেওয়া ও ভাবনার কাজ করে। অন্যদিকে, নেবুলা গুই নামক আর একটি একটি এআই স্ক্রিনে ক্লিক করা, টাইপ করা এবং টাস্ক এক্সিকিউশন পরিচালনা করে।
যৌথভাবে দুটি এআই একসঙ্গে কাজ করার ফলে ফোনটি দ্রুত অপারেট হয়। অন্যদিকে, ব্যবহারকারীর গোপনীয়তাও সুরক্ষিত থাকে।
ফোনটিতে থাকছে স্ন্যাপড্রাগন এইট এলিট চিপ এবং ১৬ জিবি র্যাম। যদিও এটি এখনও একটি প্রোটোটাইপ, খুব শিগগিরই বাজারে আসবে বলে জানা গেছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ফোন স্মার্টফোন জগতের চেহারা পাল্টে দিতে পারে। অ্যাপ মনে রাখা বা হাত দিয়ে কাজ করার যুগ হয়তো শেষ হয়ে আসছে।
