আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় বংশদ্ভূত ব্রিটিশ শিল্পপতি লক্ষ্মী মিত্তল লন্ডন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আটবার ব্রিটেনের সবচেয়ে ধনী শিল্পপতির কেন এই সিদ্ধান্ত? জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ব্রিটেনের লেবার পার্টির সরকার ধনী ব্যক্তিদের সম্পত্তিতে মোটা অঙ্কের কর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার জেরেই অসন্তুষ্ট লক্ষ্মী রাজার দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ব্রিটেনে থাকাকালীন একাধিক দামী সম্পত্তি কিনেছিলেন ধনকুবের লক্ষ্মী মিত্তল। লন্ডনে রয়েছে তাঁর একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি। কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স ফুটবল ক্লাবেও বিনিয়োগ রয়েছে তাঁর। ব্রিটেনে বর্তমানে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টিকে ৫০ লক্ষ পাউন্ডেরও বেশি অনুদান দিয়েছেন। ২০০৮ সালে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২ হাজার ৭৭০ কোটি পাউন্ডে। 

ব্রিটেনের লেবার পার্টির সরকার ‘নন-ডম’ ট্যাক্স স্ট্যাটাস তুলে দিয়েছে। আগে বিদেশি নাগরিকরা ব্রিটেনে যা আয় করতেন তার উপরে কর দিতেন। কিন্তু এখন উত্তরাধিকার কর সব সম্পত্তির উপরই প্রযোজ্য হবে, তা সেই সম্পত্তি যেখানেই থাকুক না কেন। এতেই আপত্তি মিত্তলের। তাঁর এক উপদেষ্টা এই বিষয়ে বলেছেন, "ইনকাম বা ক্যাপিটাল গেনের উপরে কর নিয়ে কোনও ইস্যু নেই। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে উত্তরাধিকার কর নিয়ে। যে সমস্ত সম্পত্তি বিদেশে আছে, সেগুলির উপরও ৪০ শতাংশ কর দিতে হবে। যা অনেকেই অস্বাভাবিক মনে করেন।"

মিত্তল ছাড়াও ইমপ্রোবেবল-এর প্রতিষ্ঠাতা হারমান নারুলা এবং রেভোলুটের নিক স্টোরনস্কির মতো প্রযুক্তি উদ্যোক্তারাও ব্রিটেন ছেড়ে দুবাইয়ে চলে গিয়েছেন। তাঁদের মতে, ব্রিটেনে কর নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে এবং ব্যবসা করা কঠিন হচ্ছে।

কোথায় যাবেন মিত্তল?
ব্রিটেন ছেড়ে লক্ষ্মী মিত্তল এখন সময় কাটাচ্ছেন সুইজারল্যান্ড এবং দুবাইয়ে। আগামী দিনে এই দুই দেশেই নিজের ঘাঁটি তৈরি করতে পারেন এই শিল্পপতি। দুবাইয়ে কোনও উত্তরাধিকার কর নেই। নেই। সুইজারল্যান্ডেও এ নিয়ে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্রিটেন ছাড়লেও মিত্তল লন্ডনের কেনসিংটন প্যালেস গার্ডেনসের বাড়িগুলি বিক্রি করছেন না। 

ব্রিটেনে বসবাসকারী ধনী ব্যক্তিদের অনেকে এখন ব্রিটেন ছাড়ছেন বলে জানা গিয়েছে। ব্রিটেন ত্যাগী শিল্পপতিদের মধ্যে মিত্তল সবচেয়ে ধনী।

দুবাইয়ে নতুন বিনিয়োগ
মিত্তলের দুবাইয়ে আগে থেকেই বাড়ি ছিল। এবার তিনি নায়া আইল্যান্ড-এর চেভাল ব্ল্যাঙ্ক প্রকল্পে পাঁচটি সেরা প্লট কিনেছেন। প্রতিটির দাম ছিল প্রায় আড়াই কোটি ডলার। এ বছরের শুরুতে তিনি এমিরেটস হিলস এলাকায় ২০ কোটি ডলার মূল্যের একটি প্রাসাদও কিনেছেন।

রাজস্থানে জন্ম নেওয়া মিত্তল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে পড়াশোনা শেষ করে পারিবারিক ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৭৬ সালে তিনি ইন্দোনেশিয়ায় নিজের প্রথম ইস্পাত কারখানা স্থাপন করেন। সেখান থেকেই গড়ে ওঠে আর্শেলরমিত্তল— আজ যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত কোম্পানি।