আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় সময় ১ অক্টোবর। জানা যায়, শাটডাউন মার্কিন সরকার। ১ অক্টোবর থেকে মার্কিন মুলুকে শুরু হয় অর্থবর্ষ। গত অর্থ বর্ষের শেষদিনে অর্থাৎ ৩০ সেপ্টেম্বর নয়া অনুমোদন বিল প্রসঙ্গে একমত হতে পারেনি দুই পক্ষ। জানা গিয়েছে, রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটরা প্রশাসনের তহবিল সংক্রান্ত বলে একমত হতে পারেনি কোনও শর্তেই।  ফলে, আমেরিকার সময়ের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিন থেকেই শুরু হয় মার্কিন সরকারের 'শাটডাউন'। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ইতিহাসের দীর্ঘতম সরকারি শাটডাউন রবিবারও পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক হতে দেয়নি। এর ফলে রবিবার সকালেই বিভিন্ন এয়ারলাইন্স মিলে অন্তত ৯৪৫টি ফ্লাইট বাতিল করেছে। পাশাপাশি, দেশে ও দেশের বাইরে যাতায়াতকারী ৩,৩০০টিরও বেশি ফ্লাইট মারাত্মক দেরির শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে ফ্লাইট মনিটরিং সংস্থা।

সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি দেখা গেছে শার্লট ডগলাস ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে, যেখানে একাই প্রায় ১৩০টি ফ্লাইট বাতিল এবং ৩০০টিরও বেশি দেরি নথিভুক্ত হয়েছে। এর ঠিক পরেই রয়েছে শিকাগোর ও’হেয়ার ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট, যেখানে ৮৩টি বাতিল ও ২৮০টির মতো দেরি হয়েছে। ডালাস–ফোর্ট ওয়ার্থ এয়ারপোর্টে ৫৬টি বাতিল এবং প্রায় ১৮৯টি দেরি রেকর্ড হয়েছে, আর নিউ ইয়র্কের জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দরে প্রায় ৫০টি ফ্লাইট বাতিলের পাশাপাশি ৩০০টির বেশি দেরির ঘটনা ঘটেছে। 

স্বাভাবিকভাবেই দীর্ঘকালের শাটডাউনে বিমান চলাচল ছাড়াও, আরও বহু খাতেই বড় প্রভাব পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকারি অচলাবস্থা আরও লম্বা হলে সামনে ছুটির সিজনে যাত্রীদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠবে।  এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারদের ঘাটতি ইতিমধ্যেই বিপুল চাপ তৈরি করেছে। শাটডাউন চলতে থাকলে বছরের ব্যস্ততম ভ্রমণ সিজনে শত শত ফ্লাইট পুনরায় বাতিল বা দেরি হতে পারে।


পণ্য পরিবহণেও বড় প্রভাব পড়েছে বিগত দিনগুলিতে।  মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় অর্ধেক বাণিজ্যিক মালবাহী কার্গো যাত্রীবাহী বিমানের কার্গো সেকশনে বহন করা হয়। ফলে বহুল ফ্লাইট বাতিল ও বিলম্ব কার্গো চলাচলেও বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে পণ্য পরিবহণ খরচ বাড়বে, যা শেষ পর্যন্ত বাজারে পণ্যমূল্যেও প্রভাব ফেলবে।


তবে, মনে করা হচ্ছে, এবার শাটডাউন শেষের মুখে। এর আগে শাটডাউন শুরুর সময়, হোয়াইট হাউস সাফ জানিয়েছিল, বরাদ্দ তহবিলের নয়া বিল রিপাবলিকানরা পাশ করাতে চাইলেও, তাতে ভোট মেলেনি ডেমোক্র্যাটদের। পর্যাপ্ত ভোটের অভাবে ওই বিল প্রেসিডেন্টের টেবিল পর্যন্তই পৌঁছতে পারেনি। কারণ সেনেটে বিল পাশ করানোর জন্য ১০০ সদস্যের মধ্যে প্রয়োজন অন্তত ৬০ জনের ভোট। সেখানে রিপাবলিকানদের সদস্য সংখ্যা কেবল ৫৩। ফলে নয়া বিল পাশে ব্যর্থ হয় তারা।  তবে সর্বশেষ তথ্য, ডেমোক্র্যাট সেনেটর তাদের অবস্থান ভেঙে ৪০ দিনের অচলাবস্থার পর মার্কিন সরকার পুনরায় চালু করার জন্য একটি চুক্তি এগিয়ে নিয়ে যেতে রিপাবলিকানদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।

আমেরিকান সেনেটররা ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকার এবং কর্মসূচির তহবিল সংগ্রহের ব্যবস্থা এগিয়ে নেওয়ার পক্ষে ৬০-৪০ ভোট দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর পাশ হয়ে গিয়েছে বিলও।