আজকাল ওয়েবডেস্ক: আবারও নিজের আগ্রাসী ট্যারিফ নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন এক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তিনি ঘোষণা করেছেন, তাঁর প্রশাসন ট্যারিফ রাজস্ব থেকে অর্জিত অর্থের অংশ হিসেবে ধনী ব্যতীত প্রতিটি আমেরিকান নাগরিককে কমপক্ষে ২,০০০ ডলার করে প্রদান করবে।

রবিবার নিজের ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ অ্যাকাউন্টে পোস্ট করে ট্রাম্প লেখেন, “যারা ট্যারিফের বিরোধিতা করে তারা বোকার মতো!” — তাঁর দাবি, এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রকে “বিশ্বের সবচেয়ে ধনী, সম্মানিত এবং প্রভাবশালী দেশ”-এ পরিণত করেছে। তিনি আরও যোগ করেন, “আমাদের দেশে প্রায় কোনো মুদ্রাস্ফীতি নেই, স্টক মার্কেট রেকর্ড ছুঁয়েছে, এবং ৪০১ হাজার কোটি বিনিয়োগে আমেরিকানরা সর্বোচ্চ লাভ পাচ্ছে।”

ট্রাম্পের দাবি, তাঁর প্রশাসন ট্যারিফের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই “ট্রিলিয়ন ডলার” রাজস্ব অর্জন করেছে, যা দিয়ে ৩৭ ট্রিলিয়ন জাতীয় ঋণ পরিশোধের কাজ শুরু হবে। একইসঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন, ঋণ পরিশোধের পাশাপাশি শিগগিরই “প্রত্যেক আমেরিকানকে (ধনী বাদে) অন্তত ২,০০০ ডলার করে ট্যারিফ ডিভিডেন্ড” দেওয়া হবে।

তবে তিনি স্পষ্ট করে জানাননি, এই অর্থ বিতরণ কীভাবে এবং কবে থেকে শুরু হবে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট আগস্ট মাসে CNBC-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য জাতীয় ঋণ কমানো এবং সেই লক্ষ্যেই ট্যারিফ রাজস্ব ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ট্রাম্পের এই ঘোষণা এমন সময়ে এসেছে যখন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট তাঁর ব্যাপক ট্যারিফ আরোপের ক্ষমতা নিয়ে একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জের শুনানি শুরু করেছে। সমালোচকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, তিনি কি নির্বাহী ক্ষমতার সীমা লঙ্ঘন করেছেন?

কিন্তু ট্রাম্প এসব সমালোচনাকে সরাসরি উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “আমরা ট্রিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করছি, আমেরিকা এখন আগের চেয়ে বেশি শক্তিশালী, ধনী ও আত্মনির্ভর।”

অর্থনীতিবিদদের একাংশ মনে করছেন, এই ঘোষণা নির্বাচনী কৌশলের অংশ হতে পারে, যেখানে ট্রাম্প সাধারণ ভোটারদের অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদের মাধ্যমে আকৃষ্ট করতে চাইছেন। অন্যদিকে, সমালোচকেরা বলছেন, ট্যারিফ রাজস্ব দিয়ে জাতীয় ঋণ শোধ ও নাগরিকদের নগদ প্রদান — উভয় দাবি বাস্তবসম্মত নয় এবং অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির নতুন ঢেউ তুলতে পারে।

তবুও, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক এই “ট্যারিফ ডিভিডেন্ড” প্রতিশ্রুতি তাঁর পুরোনো স্লোগান— “America First”-এরই নতুন আরেক অর্থনৈতিক সংস্করণ, যা মার্কিন রাজনীতিতে ফের একবার আলোড়ন তুলেছে।