দেবী চৌধুরানী’-র সাফল্যের পর ফের নতুন ছবির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। আগেই তিনি ঘোষণা করেছিলেন, এবার হাত দিতে চলেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এক অমর উপন্যাসে। সূত্রের খবর, রবীন্দ্রনাথের ‘দুই বোন’ অবলম্বনে পরবর্তী ছবিটি তৈরি করতে চলেছেন তিনি।

ছবিতে যেমন থাকবে রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যরস, তেমনই মিশে যাবে ইতিহাসের গভীর আবহ। বর্তমানে পুরোদমে চলছে চিত্রনাট্য লেখা ও প্রাথমিক প্রস্তুতির কাজ। পরিচালকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি যদিও এই গুঞ্জন নাকচ করেছেন। তবে জানা গিয়েছে, তাঁর আসন্ন ছবিতে উঠে আসবে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জীবন ও স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অসামান্য ভূমিকা। শুধু তাই নয়, ঐতিহাসিক পটভূমিকায় নির্মিত এই ছবিতে দেখা মিলবে পারে স্বয়ং বিশ্বকবির। অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথের কাহিনি আর ভারতের ইতিহাস— দুইয়ের মেলবন্ধনে এক অনন্য চলচ্চিত্র উপহার দিতে চলেছেন পরিচালক।

বিশাল ক্যানভাসে বাংলা গল্পকে তুলে ধরে বিশ্বদরবারে পৌঁছনোর স্বপ্ন দেখছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। তাঁর সাম্প্রতিকতম সৃষ্টি ‘দেবী চৌধুরানী’ সেই প্রয়াসের উজ্জ্বল নিদর্শন। এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে বলিউডে পা রাখতে চলেছেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত তাঁর এই নতুন ছবিতে দেখা যেতে পারে কাজল, রানি মুখোপাধ্যায় কিংবা বিদ্যা বালানের মতো প্রথম সারির অভিনেত্রীদের। এই জল্পনা নিয়ে যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ঘোষণা হয়নি, তবে ইন্ডাস্ট্রিতে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে উত্তেজনা।

আরও একবার সাহিত্য আর ইতিহাসের অনবদ্য মেলবন্ধন ঘটাতে চলেছেন পরিচালক শুভ্রজিৎ মিত্র। নতুন ছবির কাজে এখন তুমুল ব্যস্ত তিনি। প্রস্তুতির প্রতিটি ধাপেই নজর রাখছেন নিজে হাতে — কারণ, এই প্রজেক্টে কোনও খামতি রাখতে রাজি নন শুভ্রজিৎ। তাঁর লক্ষ্য, এমন এক ছবি তৈরি করা যা শুধু দর্শকের মন জয় করবে না, বরং বাংলা সিনেমাকে পৌঁছে দেবে আরও উঁচু আসনে।

২০২১ সালে ‘অভিযাত্রিক’ তৈরি করে জাতীয় পুরস্কার জিতে নিয়েছিলেন শুভ্রজিৎ। বিশ্বমঞ্চে নতুন করে বাংলা ছবির জয়ধ্বজা ওড়ানোই এখন তাঁর অন্যতম লক্ষ্য। আজকাল ডট ইন-কে তিনি বলেছিলেন, “জাতীয় পুরস্কারটা আমি বাংলা ছবি করেই পেয়েছি। আমি চাই, বাংলা ভাষাার ছবিকে নিয়ে জাতীয় স্তরে আলোচনা হোক। তাই বাংলা ছবিকে যাতে আরও বড় জায়গায় নিয়ে যেতে পারি, সেটা আমারই দায়িত্ব।”

পুজোয় মুক্তি পেয়েছিল শুভ্রজিৎ মিত্রের ‘দেবী চৌধুরানী’। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অমর উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি দর্শকের প্রশংসা কুড়িয়েছে। সাহিত্য আর ইতিহাসের মেলবন্ধনে যে শুভ্রজিৎ দক্ষ, তা আগেই প্রমাণিত। এবার নতুন প্রজেক্টে তিনি কীভাবে সেই মায়াজাল বুনবেন, তা নিয়েই এখন উৎসুক সিনেমাপ্রেমীরা।