আজকাল ওয়েবডেস্ক: দুঃস্বপ্নের মতো শোনালেও, দক্ষিণ-পূর্ব কলোরাডো এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কানসাসে এটি কেবল গ্রীষ্মের এক স্বাভাবিক দৃশ্য। যেখানে হাজার হাজার পুরুষ ট্যারান্টুলা সঙ্গী খুঁজতে যাত্রা শুরু করে। টেক্সাস ব্রাউন ট্যারান্টুলা, যাদের পায়ের বিস্তার প্রায় ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়, সাধারণত যৌন পরিপক্বতা অর্জনের পর (প্রায় ১০ বছর বয়সে) আগস্টের শেষ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই যাত্রায় বের হয়।
তবে যদি কোথাও লোমশ আট-পা বিশিষ্ট এই প্রাণীটিকে দেখতে পান, ভয়ের কিছু নেই, বলেন ডেনভারের কাছে বাটারফ্লাই প্যাভিলিয়ন এবং ইনসেক্ট সেন্টারের প্রধান কীটতত্ত্ববিদ মারিও পাডিলা।“এই বিশেষ ট্যারান্টুলাগুলো সম্পূর্ণ শান্ত স্বভাবের। মানুষের ক্ষতি করার কোনও উদ্দেশ্য এদের নেই,” ।
আরও পড়ন: মধুর দাম হবে আকাশছোঁয়া, কারণ জানলে অবাক হবেন
ট্যারান্টুলা উস্কানি পেলে আঘাত করতে পারে, তবে তাদের বিষ মৌমাছির হুল ফোটার মতোই সামান্য। এই মাকড়সাগুলো সাধারণত শান্ত প্রেইরি রেঞ্জল্যান্ড খোঁজে, কারণ সেখানেই স্ত্রী ট্যারান্টুলারা থাকে। ২০১৭ সালে প্র্যাট ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, কানসাসের মেডিসিন লজের কাছাকাছি হাইওয়েতে কখনও কখনও এত বেশি ট্যারান্টুলা জমে যায় যে গাড়ির চাকায় তাদের চাপা পড়ার শব্দও শোনা যায়।
কানসাস ডিপার্টমেন্ট অব ওয়াইল্ডলাইফ পার্কস অ্যান্ড ট্যুরিজমের বন্যপ্রাণী বৈচিত্র্য সমন্বয়কারী ড্যারেন রিডলে জানান, সাধারণত পুরুষ ট্যারান্টুলাই হাইওয়ে পার হতে দেখা যায়। স্ত্রী মাকড়সাগুলো বেশিরভাগ সময় নিজের জায়গাতেই থাকে। যখন কোনও পুরুষ একটি স্ত্রী মাকড়সার গর্ত খুঁজে পায়, তখন সে গর্তের বাইরে ড্রাম বাজানোর মতো শব্দ করে।
কিন্তু প্রজননের পর পুরুষদের আয়ু খুব বেশি হয় না। যৌন পরিপক্বতার পর পুরুষ ট্যারান্টুলা সাধারণত আর দুই থেকে তিন মাস বাঁচে। যদি স্ত্রী মাকড়সা আগে তাদের খেয়ে না ফেলে। পাডিলা জানান, ট্যারান্টুলারা সাধারণত একাকী জীবনযাপন করে, তাই সৌভাগ্যবশত দর্শনার্থীদের একসাথে বিশাল দঙ্গল দেখতে হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে অনেক সময় মাকড়সা–প্রেমীরা ঘাসে ঢাকা ওই অঞ্চলে ভিড় জমান, ট্যারান্টুলা দেখার বা পোষার জন্য ধরার আশায়। পথচারীরা রাস্তায় হাঁটতে থাকা একেকটি ট্যারান্টুলাও দেখতে পারেন।
কাছের লা জুন্টা, কলোরাডোর একটি পর্যটন ওয়েবসাইট এমনকি দর্শনার্থীদের জন্য কিছু টিপসও দিয়েছে। যেমন: আবহাওয়া গরম কিন্তু বাতাস না থাকলে বের হওয়া ভাল, আর সূর্যাস্তের আগের এক ঘণ্টায় মাকড়সার আনাগোনা সবচেয়ে বেশি হয়। পাডিলা আরও বলেন, যদিও ট্যারান্টুলারা অনেকের গা গুলিয়ে দিতে পারে, তারা আসলে মানুষের কাছে বিরক্তিকর মনে হওয়া পোকা। যেমন তেলাপোকা, গুবরে পোকা ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ—খেয়েই বাঁচে। এদের নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। ওরা আসলে দারুণ আকর্ষণীয় প্রাণী, আর আমাদের মতোই—শুধু নিজের জীবনটুকু বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
