আজকাল ওয়েবডেস্ক: পড়ুয়াদের জন্য ভবিষ্যৎ গড়ার মূল চাবিকাঠি কোন বিষয়? এই প্রশ্নে সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন টেলিগ্রামের সিইও পাভেল দুরভ এবং টেসলার সিইও ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে পাভেল দুরভ বলেন, গণিতই এমন একটি বিষয় যা পড়ুয়াদের শেখায় যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ও ক্রমধারায় চিন্তা করার পদ্ধতি। কোনও সংস্থা তৈরি করা বা প্রকল্প পরিচালনার ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এই ধরনের দক্ষতা থাকা। এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘যদি আপনি ছাত্র হন এবং ভাবছেন কোন বিষয়ে গুরুত্ব দেবেন, তাহলে গণিতকে বেছে নিন। এটি আপনাকে নিজের মস্তিষ্কের উপর নির্ভর করতে শেখাবে, চিন্তা করতে শেখাবে, ধাপে ধাপে সমস্যা ভেঙে সমাধান করতে পারার দক্ষতা দেবে’।

তবে, ইলন মাস্ক এই মতের সঙ্গে আংশিক দ্বিমত পোষণ করেছেন। তাঁর মতে, ‘গণিত অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে গণিতের সঙ্গে ফিজিক্স মিলিয়ে পড়লেই সবচেয়ে বেশি লাভবান হওয়া যায়’। মাস্কের এই মন্তব্য প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের বাস্তব দুনিয়ায় গণিতের প্রয়োগকে ঘিরে এক নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছে। পাভেল দুরভও অবশ্য পরে জানান, ‘যদি আপনি গণিতে দক্ষ হন, তাহলে ফিজিক্স এবং কম্পিউটার সায়েন্সেও ঝোঁক দিন। এই দুটি বিষয় বাস্তব জীবনে গণিত প্রয়োগ করে, যুক্তি ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা আরও শানিত করতে সাহায্য করে এবং গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান করতে শেখায়’। এই আলোচনার পরে নেটমাধ্যমে নানা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

কেউ দুরভ ও মাস্কের সঙ্গে একমত, আবার কেউ বলছেন, শুধুমাত্র গণিত বা বিজ্ঞান নয়, সফলতা অর্জনে অন্তর্দৃষ্টি, সাহস ও মানুষের মন বোঝার দক্ষতাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। একজন ব্যবহারকারী লেখেন, ‘আমি দর্শন ও গণিতে ডাবল মেজর করেছিলাম। পরে গ্র্যাজুয়েটে কম্পিউটার সায়েন্স। আমি মনে করি, যদি কলেজে যাও, তাহলে কঠিন কোনও বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় ও সঙ্গে এমন একটি বিষয় নাও যা পড়া ও লেখা ভালভাবে শেখায়— এটা দারুণ কম্বিনেশন’। আরও একজন লেখেন, ‘ফিজিক্স চূড়ান্ত জ্ঞান, এটি সত্যকে জানার পথ দেখায়। আর গণিত হল যেকোনও বিষয়ে প্রকাশের ভাষা। অর্থনীতি হোক বা পদার্থবিদ্যা— যেটাই শিখো না কেন, গণিত তো শিখতেই হবে’।

তবে আবার কেউ কেউ একেবারেই ভিন্নমত পোষণ করেছেন। ‘গণিত বেশিরভাগ মানুষের জন্য অকেজো। যুক্তিবাদী চিন্তা করতে গণিত জানার দরকার হয় না’। এমন মন্তব্যও উঠে এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। দুই অত্যন্ত সফল সংস্থার কর্ণধারের এই ভিন্ন মতামত পাঠক মহলে এবার বিতর্ক তৈরি করেছে। সঙ্গে উঠে এসেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ভবিষ্যতের জন্য পড়ুয়ারা কিসে বেশি জোর দেবে? বিজ্ঞান না মানবিকতা, প্রযুক্তি না ভাবনার গভীরতা? সেই উত্তর এখনও নির্ধারিত নয়, তবে আলোচনাটা চলছে জোর কদমে।