আজকাল ওয়েবডেস্ক: কাবুলে হামলা চালিয়েছিল। আফগানিস্তান পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল আগেই। তা সত্যি প্রমাণিত করল। সকাল থেকেই লাফিয়ে বাড়ছে হতাহতের সংখ্যে। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত তথ্য, তালিবানরা জানিয়েছে, সীমান্ত সংঘর্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষার সঙ্গে কোনও আপস করা হবে না এবং প্রতিটি উস্কানির কঠোর এবং কার্যকর জবাব দেওয়া হবে। একইসঙ্গে তথ্য, তালিবান বড় অভিযোগ তুলেছে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ইসলামাবাদ আশ্রয় এবং মদত দিচ্ছে আইএসআইএস-কে। অন্যদিকে পরিস্থিতি বিচারে পাক-আফগান সীমান্তের একাধিক ক্রসিং পয়েন্ট বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান, একাধিক সংবাদ মাধ্যম সূত্রে তথ্য তেমনটাও।

আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ রবিবার জানিয়েছেন, ডুরান্ড লাইন, অর্থাৎ আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তে রাতভর সংঘর্ষে ৫৮ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত এবং ৩০ জন আহত হয়েছে। জাবিউল্লাহ মুজাহিদ রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে ইসলামাবাদকে সহিংস কট্টর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগও করেছেন এবং দাবি করেছেন যে এই সন্ত্রাসীরা, যারা মূলত একাধিক দেশের জন্য হুমকি স্বরূপ, তাদের কাবুলের কাছে হস্তান্তর করা হোক। তাঁর দাবি, খাইবার পাখতুনখোয়ায় আইএসআইএস সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য নতুন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। করাচি এবং ইসলামাবাদ বিমানবন্দর থেকে প্রশিক্ষণের জন্য এই কেন্দ্রগুলিতে নতুন লোক আনা হয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি। 

 

আরও পড়ুন: 'মানুষ আমার মতো নেতা চায়', বিহারে তাবড় তাবড় নেতাদের অনায়াসে চ্যালেঞ্জ করছেন সিলিন্ডার বয়ে ঘাম ঝরানো ছোটে


সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, মুজাহিদ জানিয়েছেন, তেহরান এবং মস্কোতে হামলার পরিকল্পনা ওই কেন্দ্রগুলি থেকে করা হয়েছিল এবং একই কেন্দ্রগুলি আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, 'পাকিস্তানের উচিত সেখানে লুকিয়ে থাকা আইএসআইএস সদস্যদের দেশ থেকে বহিষ্কার করা অথবা তাদের ইসলামিক আমিরাতের হাতে তুলে দেওয়া। আইএসআইএস গোষ্ঠী আফগানিস্তানসহ বিশ্বের অনেক দেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।'

হামলা প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, ১১ অক্টোবর গভীর রাতে আফগানিস্তানের ২০১তম খালিদ বিন ওয়ালিদ আর্মি কর্পস নাঙ্গারহার এবং কুনার প্রদেশে ডুরান্ড লাইনের কাছে পাকিস্তানি সামরিক পোস্টগুলিতে আক্রমণ চালানো হয়। হেলমান্দ প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র মাওলাভি মোহাম্মদ কাসিম রিয়াজ গণমাধ্যমকে সকালের দিকে জানিয়েছিলেন, বাহরামপুর জেলার ডুরান্ড লাইনের কাছে গত রাতে আফগান বাহিনীর প্রতিশোধমূলক অভিযানে ১৫ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি বলেন, এই অভিযানের সময় আফগান বাহিনী তিনটি পাকিস্তানি সামরিক ফাঁড়িও দখল করেছে এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাজেয়াপ্ত করেছে।


কাবুল ও পাকতিকা প্রদেশে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক বিমান হামলার পর পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে আফগান বাহিনী হেলমান্দ, কান্দাহার, জাবুল, পাকতিকা, পাকতিয়া, খোস্ত, নাঙ্গারহার এবং কুনার প্রদেশে পাকিস্তানি পোস্টগুলিকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শুরু করে। এই সমস্ত প্রদেশ পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে অবস্থিত। বিমান হামলা, তারপর প্রতিশোধ।

বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানে তিনটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যায়। দু'টি কাবুলে এবং একটি দক্ষিণ-পূর্ব পাকতিকায়। তালিবান-নিয়ন্ত্রিত আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রক ইসলামাবাদকে এই হামলার জন্য দায়ী করে। পাকি সেনার বিরুদ্ধে আফগান সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলে। আফগান সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, "কাবুলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতে, তালিবান বাহিনী সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।"  প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য, মৃত্যু হয়েছে ৫৮ জন পাক সেনার।

 

 একইসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য, খাইবার-পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তান অঞ্চলে সীমান্তে উত্তেজনা বৃদ্ধির পর রবিবার পাকিস্তান আফগানিস্তানের দিকের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। তোরখাম এবং চামানে দুটি প্রধান পয়েন্ট এবং খারলাচি, আঙ্গুর আড্ডা এবং গুলাম খানে কমপক্ষে তিনটি ছোট ক্রসিং বন্ধ বলে জানা গিয়েছে।