বছরের শেষে বিয়েবাড়ি, পার্টি কিংবা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ হু হু করে বাড়তে থাকে। এসব অনুষ্ঠানে খাবার হল আয়োজনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ। জমকালো মেনু, নানা পদের খাবার আর উপচে পড়া বাফেটের সামনে পড়ে অনেকেই না বুঝেই প্রয়োজনের চেয়ে বেশি, দ্রুত এবং ভারী খাবার খেয়ে ফেলেন। কিন্তু উৎসবের আনন্দ কাটতে না কাটতেই তার মাশুল দিতে হয় পেট ফোলা, অস্বস্তি আর বুকজ্বালায়।
চিকিৎসক পবন রেড্ডি থোন্ডাপু জানিয়েছেন সামাজিক অনুষ্ঠানে কীভাবে পেটের অস্বস্তি এড়িয়ে খাবার উপভোগ করা যায়।
খুব দ্রুত খাওয়া
অনেক পদ দেখলে তাড়াহুড়ো করে একের পর এক খাবার মুখে তোলা স্বাভাবিক। কিন্তু চিকিৎসকের মতে, দ্রুত খেলে পাকস্থলীর উপর চাপ পড়ে এবং অ্যাসিডিটি বাড়ে। তিনি বলেন, “ধীরে খান। এক কামড়ের পর চামচ নামিয়ে রাখুন। ভাল করে চিবিয়ে খাওয়াই হার্টবার্ন কমানোর সবচেয়ে সহজ উপায়।”
একসঙ্গে অনেক ভারী খাবার মেশানো
এক প্লেটেই ভাজাভুজি, ঝোল, মিষ্টি আর ঠান্ডা পানীয় তুলে নেওয়া পেটের জন্য বেশ কষ্টকর। এতে গ্যাস তৈরি হয় এবং ফোলাভাব বাড়ে। ডা. থোন্ডাপুর পরামর্শ দেন, “অল্প অল্প করে নিন। সব একসঙ্গে প্লেটে তুলবেন না।”
রাতে দেরিতে খাওয়া ও শুয়ে পড়া
অনেক অনুষ্ঠান গভীর রাত পর্যন্ত চলে। খাওয়ার পর অনেকেই আরাম করে বসে পড়েন বা শুয়ে পড়েন। এতে অ্যাসিড সহজেই উপরের দিকে উঠে বুকজ্বালা তৈরি করে। ভাল বিকল্প হল খাওয়ার পর একটু হাঁটা এবং অন্তত দু’ঘণ্টা সোজা হয়ে থাকা।
কার্বনেটেড পানীয় ও তথাকথিত ‘ডাইজেস্টিভ’
সফট ড্রিঙ্ক বা সোডা গ্যাস বাড়ায় এবং পেটের ভিতরের চাপ বৃদ্ধি করে। এগুলি হজমে সাহায্য করে বলে মনে হলেও আসলে অ্যাসিডিটি আরও বাড়তে পারে। এর বদলে হালকা গরম জল বা হার্বাল চা খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
খিদে না থাকলেও আবেগের বশে খাওয়া
অনেক সময় বিরক্তি, আনন্দ বা শুধু সময় কাটানোর জন্য খাবার তুলে নেওয়া হয়। এটিই অতিরিক্ত খাওয়ার বড় কারণ। চিকিৎসকের মতে, সত্যিই খিদে পেলে তবেই খান এবং দ্বিতীয়বার নেওয়ার আগে ভাবুন।
খাওয়ার সময় আঁটসাঁট পোশাক
খাওয়ার সময় টাইট পোশাক পরলে পেটের উপর চাপ পড়ে এবং অ্যাসিড উপরের দিকে উঠতে পারে। “অনুষ্ঠানে আরামদায়ক পোশাক পরুন। হজমের জন্য পাকস্থলীর জায়গা দরকার,” বলেন ডা. থোন্ডাপু।
তবে নিয়মিত খাবারের পরও যদি বারবার বুকজ্বালা বা পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে অবহেলা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ এর পেছনে অ্যাসিড রিফ্লাক্স, গ্যাস্ট্রাইটিস বা কোনও খাদ্য অসহিষ্ণুতা থাকতে পারে।
