আজকাল ওয়েবডেস্ক: এক সময় ডাক্তারি পেশাকে অত্যন্ত সম্মান ও দায়িত্বের চোখে দেখা হত। চিকিৎসকের উপর অগাধ বিশ্বাস রাখতেন রোগীরা। কিন্তু বর্তমানে চিকিৎসা ক্ষেত্রে গাফিলতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা ঘটনা স্বাস্থ্যপরিষেবায় দায়বদ্ধতার প্রশ্নটিকে বড় করে তুলেছে।

 

সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে এসেছে অস্ট্রিয়ার গ্রাজ রিজিওনাল হাসপাতাল থেকে। গত ১৩ জানুয়ারি, ২০২৪-এ সেখানে এক ৩৩ বছর বয়সী যুবকের মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হয়। এক সিনিয়র চিকিৎসক এবং অপর এক ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে সেই অস্ত্রোপচার চলার সময়ই এক প্রশিক্ষণরত নিউরোসার্জন তাঁর ১২ বছরের মেয়েকেও সেই প্রক্রিয়ায় সামিল করেন বলে অভিযোগ।

 

এই ঘটনায় গাফিলতি এবং বেআইনিভাবে রোগীর উপর পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভিযোগ উঠেছে। যুবকের আইনজীবী, জুলিয়া স্টাইনার জানিয়েছেন যে, অস্ত্রোপচারের প্রায় শেষের দিকে অভিযুক্ত মহিলা সার্জন তাঁর মেয়ের হাতে একটি ড্রিল তুলে দেন এবং রোগীর মাথার খুলিতে একটি ছিদ্র করতে নির্দেশ দেন। এমনকী, ওই সার্জন নাকি এ-ও দাবি করেন যে তাঁর মেয়ে এই মুহূর্তে তাঁর প্রথম ‘গাইনোকোলজিক্যাল হিস্টেরেক্টমি’ (জরায়ু বাদ দেওয়ার অস্ত্রোপচার) সম্পন্ন করেছে।

 

অস্ত্রোপচারের পর এই ঘটনা নিয়ে বেনামি অভিযোগ জমা পড়লে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায় এবং ওই নিউরোসার্জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। যদিও অস্ত্রোপচারটি সফল হয়েছিল, আইনজীবী স্টাইনারের মতে, পরিস্থিতি রোগীর জন্য মারাত্মক হতে পারত।

 

অন্য দিকে, অভিযুক্তদের আইনজীবীর বয়ান আবার অন্য কথা বলছে। আইনজীবী বার্নহার্ড লেহোফার আদালতে দাবি করেন যে মেয়েটি আদপে ড্রিল চালায়নি। তবে তিনি স্বীকার করেন যে, তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে আসা অনুচিত কাজ ছিল। তিনি আরও জানান, প্রায় দু’বছর ধরে ওই সার্জন তাঁর ভুলের মাশুল গুনছেন। অপর এক আইনজীবী আবার দাবি করেন, চিকিৎসক নাকি মেয়েটির সঠিক বয়স জানতেন না।

 

অভিযুক্ত নিউরোসার্জন এবং তাঁর সহকারী চিকিৎসক, দু’জনের বিরুদ্ধেই শারীরিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়েছে, যা তাঁরা অস্বীকার করেছেন। সহকারী চিকিৎসক সাক্ষ্য দেওয়ার সময় জানান, মহিলা সার্জন একটি ফোনকলের জন্য বাইরে গেলে মেয়েটি সাহায্য করার আর্জি জানায়। অনুমতি মেলার পর, তিনি যখন ড্রিলটি ধরেছিলেন, তখন মেয়েটিকে কেবল ড্রিলের উপর হাত রাখতে দেওয়া হয়েছিল। মেয়ের মা জানান, তিনি পিছনে দাঁড়িয়ে থাকায় এবং অন্যমনস্ক থাকায় ড্রিল করার মুহূর্তটি স্পষ্টভাবে দেখতে পাননি।

আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মন্তব্যে কি প্রকাশ্যে চলে এল মোদির কূটনৈতিক ব্যর্থতা? ভারতের প্রধানমন্ত্রীর রিমোট মার্কিন প্রেসিডেন্টের হাতে?

আগামী ১০ ডিসেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে।