আজকাল ওয়েবডেস্ক: কেউ বলতেন জীবন্ত কুম্ভকর্ণ যেন। কেউ বলতেন স্লিপিং প্রিন্স। কেবল ঘুমিয়েই থাকেন। কেউ অপেক্ষা করতেন, যদি সোনার কাঠি ছুঁইয়ে ফিরে আসেন রাজকুমার। সোনার কাঠি, জিয়ন কাঠি, রাজা বাবা কি না চেষ্টা করেননি। তবে কিছুতেই কিছু কাজ হল না। রূপকথার গল্পের মতো, জেগে উঠলেন না রাজকুমার। ২০ বছর কোমায় ছিলেন। গভীর ঘুমে থেকেই চিরঘুমের পথে যাত্রা করলেন সৌদির প্রিন্স আল ওয়ালিদ।

 
সৌদি আরবের প্রিন্স আল ওয়ালিদ। অনেকেই তাঁকে স্লিপিং প্রিন্স বা ঘুমের যুবরাজ বলে ডাকতেন। প্রিন্স আল ওয়ালিদ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নিজের ৩৬ তম জন্মদিন পালন করেছেন। কিন্তু বিগত ২০ বছর ধরে এই যুবরাজ কোমাতে ছিলেন। জানা যায়, এর পিছনে রয়েছে এক ভয়াবহ দুর্ঘটনা। সালটা ২০০৫। মিলিটারি কলেজের পড়ুয়া ছিলেন তখন যুবরাজ। তখনই লন্ডনে এক দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। গুরুতর আহত হন। তারপর থেকেই এরপর থেকে টানা ২০ বছর ধরে তিনি কোমাতে ছিলেন। 

আরও পড়ুন: বিধানসভায় বিতর্কে মন নেই, সেই সময়ে কৃষিমন্ত্রী মগ্ন রামি গেম খেলায়! ভাইরাল ভিডিও-তে মহারাষ্ট্রে মহা-শোরগোল...

রিয়াধের কিং আব্দুলগাজী মেডিক্যাল সিটি হাসপাতালে বছরের পর বছর ধরে ভর্তি ছিলেন তিনি ২০ বছর ধরে এই প্রিন্স ছিলেন ভেন্টিলেটরে। একটি টিউব দিয়ে তিনি খাবার খেতেন। 
 

২০১৯ সালে এই প্রিন্স সামান্য কিছু বলার চেষ্টা করেছিলেন। তারপর থেকে তিনি একেবারে ঘুমের দেশে ছিলেন। গ্লোবাল ইমামস কাউন্সিল যুবরাজের মৃতুর পর, এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘যুবরাজ আলওয়ালিদ বিন খালেদ বিন তালাল আল সৌদের মৃত্যুতে  গ্লোবাল ইমামস কাউন্সিল রাজকীয় মহামান্য ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সালমান এবং সম্মানিত রাজপরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা এবং আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছে,  তিনি প্রায় বিশ বছর আগের একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ সংগ্রামের পর প্রয়াত হয়েছেন।‘

?ref_src=twsrc%5Etfw">July 19, 2025

উল্লেখ্য, ভয়াবহ দুর্ঘটনার সময় যুবরাজের বয়স ছিল মাত্র ১৫। দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত এবং অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়, যার ফলে তিনি সম্পূর্ণ কোমায় চলে যান। পরে তাকে রিয়াদের কিং আব্দুল আজিজ মেডিকেল সিটিতে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন

 

 

বছরের পর বছর ধরে, প্রিন্স আলওয়ালিদ 'ঘুমন্ত রাজপুত্র' নামে পরিচিতি লাভ করেন। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর পরিবার দিন গুনেছেন, যদি কোনও একদিন উঠে বসেন তিনি। মাঝে মাঝে তাঁড় আঙুল নাড়ার ফুটেজ সেই আশাকে বাড়িয়ে তুলত কয়েকগুণ। এই দীর্ঘ সময়কাল ধরে আমেরিকান এবং স্প্যানিশ বিশেষজ্ঞরা তাঁর চিকিৎসা করতেন। বাবা খালেদ বিন তালাল কোনওদিন ছেলের লাইফ সাপোর্ট সরিয়ে দিতে রাজি হননি। কারণ সেটি সরিয়ে দেওয়া হলেই তৎক্ষণাৎ মৃত্যু হত যুবরাজের।

 

প্রিন্স আলওয়ালিদ জন্মগ্রহণ করেন ১৯৯০ সালে। প্রিন্স খালেদ বিন তালাল আল সৌদের বড় ছেলে তিনি এবং বিলিয়নেয়ার ব্যবসায়ী প্রিন্স আলওয়ালিদ বিন তালালের ভাগ্নে। ২০ জুলাই, রবিবার নামাজের পর রিয়াদের ইমাম তুর্কি বিন আবদুল্লাহ মসজিদে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।