আজকাল ওয়েবডেস্ক: ২০২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়, উত্তাল হয়েছিল বাংলা। তারপর থেকে হাসিনা দেশ ছাড়া। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়। সোমবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করে।
তারপর থেকেই বাংলাদেশের দিকে দিকে উচ্ছ্বাস, আনন্দের পরিবেশ। এদিন রায় ঘোষণার আগে থেকেই, বিক্ষোভের আঁচ পেয়েই, কড়া নিরাপত্তায় এক প্রকার মুড়ে ফেলা হয়েছিল ঢাকাকে। তবে, একদিকে যখন মুজিব কন্যার বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছিল, তখনই কড়া নিরাপত্তার মাঝেই, ফের হামলা করার চেষ্টা করা হয়ে মুজিবুর রহমানের বাড়িতে।

সোমবার, ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙতে দুটি এক্সকাভেটর নিয়ে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয় ধানমন্ডির বাড়ির সামনে। যদিও পুলিশ জমায়েত ছত্রভঙ্গ করে দেয় বলে খবর বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে। বিক্ষোভকারীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে এক্সকাভেটর ঢোকানোর চেষ্টা করলে বিক্ষোভকারীদের বাধা দেওয়া হয়।
এক পর্যায়ে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধাক্কাধাক্কিও হয়। বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বিক্ষোভকারীরা এদিন ধানমন্ডির বাড়ি নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেছিল। সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাতে বাধা দেন। এখনও সেখানে জমায়েত রয়েছে, বিক্ষোভকারীরা অবস্থান করছে, তথ্য তেমনটাই। এর আগে, ফেব্রুয়ারিতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে মুজিবর রহমানের বাড়ির বাইরে হামলা হয়েছিল। মাঝরাতে ক্রেন ও এক্সকাভেটর নিয়ে গিয়ে, ভেঙে ফেলা হয় মুজিবের বাড়ির একাংশ। তার পরেই, ১৭ নভেম্বর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চেয়েছিল বিক্ষোভকারীরা, বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর তেমনটাই।
এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মঙ্গলবার তাঁর ফাঁসির সাজা ঘোষণা করেছে। বঙ্গবন্ধুর মেয়ের ফাঁসি, বাংলাদেশেই মানবতাবিরোধী অপরাধে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে করা মামলা দায়র হয়েছিল। সোমবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল রায় ঘোষণা করল। এই রায় ছিল মোট ৪৫৩ পাতার। রায়ের মোট ছ'টি অংশ ছিল। ট্রাইব্যুনালের প্রধান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদার রায়ের শেষ অংশ পড়ে শোনান। হাসিনার সঙ্গেই, এই মামলা আরও দু'জনের বিরুদ্ধে। তাঁরা হলেন, বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। আসাদুজ্জামানকেও এদিন মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণার আগে থেকেই দফায় দফায় উত্তাল হয়েছে বাংলা। আবার ঢাকা-সহ একাধিক জায়গায় রায় ঘোষণা সরাসরি সম্প্রচারের জন্য বড় স্ক্রি্ন লাগানো হয়েছিল। বহু পড়ুয়ারা সেখানে জমা হয়েছেন। সকাল থেকেই একদিকে উৎকণ্ঠা, অপেক্ষা, আশঙ্কা, উত্তেজনা, ওপার বাংলার নানা ছবি ফুটে উঠেছে। এদিন রায় পড়ার সময়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাকে দোষী ঘোষণা করে। বিচারপতি জানিয়ে দেন, ট্রাইবুনালের আইন অনুযায়ী তাঁরা শাস্তির যোগ্য। রায় পাঠের সময়, বিচারপতি জানান, হাসিনা-সহ তিন অপরাধীর বিরুদ্ধে ৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। যে সংখ্যা নেহাত কম নয়। আন্তর্জাতিক ট্রাইবুনাল হাসিনাকে তিনটি ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে। তারপরেই ঘোষণা করা হয় রায়। জানিয়ে দেওয়া হল, মুজিব কন্যার মৃত্যদণ্ডের রায়। রায় ঘোষণার পরেই, আদালত কক্ষ হাততালিতে ফেটে পড়ে।
