আজকাল ওয়েবডেস্ক: বারব্যাঙ্ক পুলিশ আবারও গ্রেপ্তার করেছে ক্যালেস কারন ক্রাউডার (৩৮), যিনি ইতিমধ্যেই যৌন অপরাধে দোষী সাব্যস্ত একজন নিবন্ধিত সেক্স অফেন্ডার। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে বারব্যাঙ্কের এক দোকানের ভেতর মহিলাদের পশ্চাৎদেশে নাক গলানোর অভিযোগে তাকে হাতেনাতে ধরা হয়। শুক্রবার স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কেটিএলএ (KTLA) এ খবর নিশ্চিত করেছে।

 

তবে পুলিশ এখনো ওই দোকানের নাম বা সুনির্দিষ্ট সময় প্রকাশ করেনি এবং নতুন মামলার বুকিং শিটও জনসমক্ষে আনা হয়নি। কেবলমাত্র জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।

 

এই গ্রেপ্তারি হয় মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর, যখন একই অভিযোগে ক্রাউডারকে আটক করা হয়েছিল। জুলাই মাসে বারব্যাঙ্কের এম্পায়ার সেন্টারের একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি এক মজিলা ক্রেতাকে ফলো করছেন এবং সুযোগ বুঝে তার পেছনে ঝুঁকে "অশালীনভাবে ঘ্রাণ নিচ্ছেন"। সেই ঘটনায় বারব্যাঙ্ক পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং প্রসিকিউটর এক ধারা “loitering with intent to commit a crime” (অপরাধমূলক উদ্দেশ্যে ঘোরাফেরা) অভিযোগে মামলা দায়ের করে। তার জামিনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লক্ষ মার্কিন ডলার।

 

বারব্যাঙ্ক পুলিশ জানায়, ক্রাউডার একজন নিবন্ধিত যৌন অপরাধী এবং জুলাইয়ের গ্রেপ্তারের সময় তিনি সক্রিয় প্যারোলে ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ২০২১ সাল থেকে বারবার একই ধরনের অভিযোগ উঠেছে, বিশেষ করে গ্লেনডেল ও বারব্যাঙ্ক এলাকায় একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছেন।

 

নতুন ঘটনায় তার প্যারোল স্ট্যাটাস কী—সেটি জানতে ক্যালিফোর্নিয়া সংশোধন বিভাগে যোগাযোগ করেছে কেটিএলএ।

 

বারব্যাঙ্ক পুলিশ জানিয়েছে, যদি কেউ এমন ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন বা ক্রাউডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে চান, তাহলে তাদের অনুরোধ করা হচ্ছে বারব্যাঙ্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট ইনভেস্টিগেশনস ডিভিশনে ৮১৮-২৩৮-৩২১০ নম্বরে যোগাযোগ করতে।

 

এদিকে, স্থানীয় নাগরিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে, কারণ দীর্ঘদিন ধরে ক্রাউডার একই ধরনের কর্মকাণ্ড চালিয়ে গেলেও তিনি বারবার জামিনে ছাড়া পাচ্ছেন। প্রশ্ন উঠছে—আইন ও প্যারোল ব্যবস্থা কি যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে?

 

বারব্যাঙ্ক পুলিশ জানিয়েছে, ক্যালেস কারন ক্রাউডারের বিরুদ্ধে তদন্ত দ্রুত এগিয়ে চলছে। পুলিশের মুখপাত্র বলেন, “এ ধরনের আচরণ শুধুই আইন ভঙ্গ নয়, জননিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি। আমরা চাই, যেসব ভুক্তভোগী এখনো সামনে আসেননি, তারা নির্দ্বিধায় অভিযোগ জানান।” পুলিশ আরও জানিয়েছে, ক্রাউডার যেহেতু আগে থেকেই নিবন্ধিত যৌন অপরাধী, তাই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে।

 

অন্যদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এক মহিলা ক্রেতা বলেন, “আমরা দোকানে কেনাকাটা করতে এসেও নিরাপদ নই, অথচ এই মানুষটি বারবার জামিনে ছাড়া পাচ্ছেন। এটা ভীষণ উদ্বেগজনক।” অনেকেই মনে করছেন, বিচারব্যবস্থার ফাঁকফোকর কাজে লাগিয়েই ক্রাউডার বারবার একই অপরাধ করছে।

 

মনোবিদরা এ ঘটনাকে এক ধরনের পুনরাবৃত্ত যৌন বিকারগ্রস্ততা বলে আখ্যা দিয়েছেন। মনোবিদ ড. লিন্ডা ম্যাথিউজের মতে, “এটি একটি কমপালসিভ ডিসঅর্ডার, যেখানে ব্যক্তি তার প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। শুধু শাস্তি নয়, বাধ্যতামূলক চিকিৎসা ও দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন ছাড়া এই প্রবণতা ঠেকানো সম্ভব নয়।” বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, চিকিৎসার অভাবে ক্রাউডারের মতো অপরাধীরা সমাজে আরও ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।