আজকাল ওয়েবডেস্ক: অপারেশন ‘সিন্দুর’ পাকিস্তানের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে। সেই আতঙ্ক থেকেই পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের লাইন অব কন্ট্রোল সংলগ্ন ফরওয়ার্ড এলাকাগুলিতে ব্যাপকভাবে কাউন্টার-ড্রোন বা অ্যান্টি-ইউএএস ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, রাওয়ালাকোট, কোটলি এবং ভিম্বের সেক্টরের বিপরীতে নতুন করে একাধিক কাউন্টার-ড্রোন সিস্টেম বসানো হয়েছে। পাকিস্তান সেনার মধ্যে ‘অপারেশন সিন্দুর ২.০’-এর আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে বলেই এই প্রস্তুতি।
ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদন অনুসারে এলওসি বরাবর অন্তত ৩০টির বেশি বিশেষ অ্যান্টি-ড্রোন ইউনিট মোতায়েন করেছে পাকিস্তান। মূল লক্ষ্য—ভারতের ড্রোন নজরদারি ও আক্রমণ প্রতিহত করতে আকাশসীমার উপর নজরদারি এবং ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ক্ষমতা জোরদার করা।
সেক্টরভিত্তিকভাবে রাওয়ালাকোট অঞ্চলে অ্যান্টি-ড্রোন ব্যবস্থার দায়িত্বে রয়েছে ২য় আজাদ কাশ্মীর ব্রিগেড, যারা পুঞ্চ সেক্টরের বিপরীতে অবস্থান করছে। কোটলিতে এই দায়িত্ব ৩য় আজাদ কাশ্মীর ব্রিগেডের, যাদের কার্যক্ষেত্র রাজৌরি, পুঞ্চ, নৌশেরা ও সুন্দরবনি সেক্টরের মুখোমুখি। ভিম্বের সেক্টরে কাজ করছে ৭ম আজাদ কাশ্মীর ব্রিগেড।
মোতায়েন করা সিস্টেমগুলির মধ্যে অন্যতম ‘স্পাইডার’ কাউন্টার-ইউএএস সিস্টেম। এটি প্যাসিভ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ডিটেকশন ও ডিরেকশন-ফাইন্ডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত ছোট লয়টারিং মিউনিশন থেকে বড় ড্রোন শনাক্ত করতে সক্ষম বলে দাবি। পাশাপাশি ব্যবহৃত হচ্ছে ‘সাফরাহ’ অ্যান্টি-ইউএভি জ্যামিং গান।
‘সফট-কিল’ ব্যবস্থার পাশাপাশি পাকিস্তান প্রচলিত বিমান প্রতিরক্ষা অস্ত্রও নামিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওয়েরলিকন জিডিএফ ৩৫ মিমি টুইন-ব্যারেল অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট গান, রাডার-সহায়িত ব্যবস্থা এবং আনজা মার্ক-২ ও মার্ক-৩ ম্যানপ্যাডস, যা ধীরগতির ও নিচু দিয়ে ওড়া লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম।
এই সাম্প্রতিক মোতায়েন পাকিস্তানের অস্বস্তি স্পষ্ট করে দিচ্ছে। ভারতের সেনা, নৌ ও বায়ুসেনার একাধিক যৌথ মহড়া এবং আক্রমণাত্মক কৌশল ইসলামাবাদকে চাপে রেখেছে। জানা যাচ্ছে, পাকিস্তান তুরস্ক ও চিনের সঙ্গে নতুন ড্রোন ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কথাবার্তাও চালাচ্ছে, কারণ অপারেশন ‘সিন্দুর’-এ তাদের প্রতিরক্ষা দুর্বলতা প্রকাশ্যে এসেছে।
উল্লেখ্য, ৭ মে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যু হলে তার প্রত্যুত্তরে অপারেশন ‘সিন্দুর’ শুরু করে ভারত। এই অভিযানে একাধিক জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংসের পাশাপাশি পাকিস্তানের ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ঘাঁটিতেও আঘাত হানা হয়। মাত্র তিন দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে ১০ মে যুদ্ধবিরতির জন্য ভারতের দ্বারস্থ হতে বাধ্য হয় পাকিস্তান।
