আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম ফ্রন্টলাইনার শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখন উত্তাল রয়েছে বাংলাদেশ। সেখানকার জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র হিসেবে একে আখ্যা দিয়েছেন তাঁর ভাই শরিফ ওমর হাদি। বাংলাদেশি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওমর হাদি অভিযোগ করেছেন—সরকারের ভেতরের একটি ‘স্বার্থান্বেষী মহল’ পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।


রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওমর হাদি বলেন, “আপনারাই ওসমান হাদিকে হত্যা করেছেন, আর এখন এই ঘটনাকে ইস্যু বানিয়ে নির্বাচন ভণ্ডুল করার চেষ্টা করছেন।” তিনি জানান, তাঁর ভাই চেয়েছিলেন ফেব্রুয়ারির মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। তবে সেই পথ বানচাল করা হয়েছে। 


ওমর হাদি আরও বলেন, “খুনিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনুন, যাতে নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কিন্তু সরকার এখনও পর্যন্ত আমাদের সামনে কোনও সদর্থক কাজ দেখাতে পারেনি।” তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ওসমান হাদির বিচার না হয়, তবে একদিন আপনাদেরও বাংলাদেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হতে হবে।”


এদিন তিনি দাবি করেন, কোনও সংস্থা কিংবা ‘বিদেশি প্রভুদের’ কাছে মাথা নত না করায় তাঁর ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। দ্য ডেইলি স্টার-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, একই সমাবেশে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আবদুল্লাহ আল জাবের সরকারকে দেওয়া ৩০ দিনের সময়সীমা দিয়েছে। তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। 


প্রসঙ্গত, গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে যুক্ত ও ভারতবিরোধী ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদি গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার বিজয়নগর এলাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশায় যাওয়ার সময় খুব কাছ থেকে গুলিবিদ্ধ হন। মোটরসাইকেলে আসা দুই হামলাকারী তাঁর মাথায় গুলি করে দ্রুত পালিয়ে যায়।

 গুরুতর অবস্থায় তাঁকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর চিকিৎসকেরা তাঁর ব্রেনে মারাত্মক চোটের কথা জানান। পরে তাঁকে সিঙ্গাপুরে এয়ারলিফট করা হয়।
এরপর ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এই মৃত্যুর পর গোটা বংলাদেশ জুড়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ঢাকার শাহবাগ মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হয়ে দ্রুত গ্রেপ্তার ও ন্যায়বিচারের দাবি জানান। শুরু হয় বিরাট প্রতিবাদ আন্দোলন।