আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্রাজিলের তরুণ মডেল আর্থার ও উরসো আবারও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ‘ফ্রি লাভ’ বা মুক্ত ভালোবাসার ধারণা প্রচার এবং একগামিতার বিরোধিতা করার উদ্দেশ্যে তিনি একসঙ্গে নয়জন মহিলাকে  বিয়ে করেছিলেন। সাও পাওলোর একটি ক্যাথলিক গির্জায় তাঁর প্রথম স্ত্রী লুয়ানা কাজাকির সঙ্গে আরও আটজন মহিলাকে  প্রতীকীভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করা হয়। তবে ব্রাজিলে পলিগ্যামি বা বহুবিবাহ আইনত নিষিদ্ধ হওয়ায় এই বিবাহগুলোর কোনও আইনি স্বীকৃতি নেই।

প্রথমে বিষয়টি রঙিন ও আলোচনার উপযোগী মনে হলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমে ফাটল ধরতে শুরু করেছে এই বহুগামি সংসারে। নয় স্ত্রীকে সমানভাবে সময় ও স্নেহ দিতে না পেরে আর্থার শুরু করেছিলেন এক ধরনের ‘সেক্স রোটা’—অর্থাৎ যৌন সম্পর্কের সময়সূচি। কোন দিন কোন স্ত্রীকে সময় দেওয়া হবে, তা অনুযায়ী সাজানো ছিল এই সূচি। তিনি মনে করেছিলেন এতে সবার চাহিদা পূরণ হবে। কিন্তু পরিস্থিতি হয়েছিল উল্টো। আর্থার স্বীকার করেছেন, নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুসরণ করতে গিয়ে অনেক সময় তিনি বাধ্য হয়ে ঘনিষ্ঠ হতেন, যেখানে স্বাভাবিক আনন্দ বা স্বতঃস্ফূর্ততা অনুপস্থিত ছিল। কখনও বা তিনি একজন স্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তে থেকেও অন্য একজনের কথা ভাবতেন, যা সম্পর্ককে আরও জটিল করেছিল।

তিনি বলেন, সময় বেঁধে দেওয়ার পর যৌনতা যেন কর্তব্যের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছিল, আনন্দের মতো নয়। তাই শেষ পর্যন্ত সেই সময়সূচি বাতিল করা হয়, এবং এখন সব কিছুই স্বাভাবিক প্রবাহে চলতে দেওয়া হচ্ছে। আর্থার জানাচ্ছেন, এতজন সঙ্গী থাকলে স্নেহ বা মনোযোগের অভাব হয় না, তাই নির্দিষ্ট নিয়ম মানার প্রয়োজনও পড়ে না।

তবে সমস্যা একেবারে শেষ হয়নি। স্ত্রীদের মধ্যে মাঝে মাঝে ঈর্ষা দেখা দেয়, বিশেষত যখন তিনি কাউকে দামি উপহার দেন এবং অন্য কেউ তুলনামূলক কম মূল্যমানের কিছু পান। আর্থার বলেন, প্রতিদিনই তাঁদের সকলের মনোযোগ, স্নেহ ও ঘনিষ্ঠতার দাবি থাকে, এবং কারও ক্ষেত্রে বেশি বা কম করলে মনোমালিন্য তৈরি হয়। তিনি নিজেও স্বীকার করছেন যে সম্পর্কের এই নতুন কাঠামো এখনও তাঁর শেখার পর্যায়ে।

এই জটিল সংসারজীবনে বড় ধাক্কা আসে যখন তাঁর স্ত্রীদের একজন, আগাথা, বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। আগাথা জানান, তিনি আবার একগামি সম্পর্কের দিকে ফিরে যেতে চান এবং আর্থারকে একা নিজের জন্য চাইছেন। আর্থার বলেন, আগাথার এই সিদ্ধান্ত তাঁকে ব্যথিত করেছে, তবে তিনি এখনই নতুন কাউকে দলে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন না। অন্য স্ত্রীদের মতে, আগাথা প্রকৃত অনুভূতির চেয়ে বেশি রোমাঞ্চের জন্যই এই সম্পর্কের অংশ হয়েছিলেন।

বর্তমানে আর্থার তাঁর আট স্ত্রীকে নিয়ে ‘অনলিফ্যানস’-এ কনটেন্ট তৈরি করলেও স্বীকার করছেন যে বহুগামি সংসার পরিচালনা করা মোটেই সহজ নয়। তবু তিনি দাবি করেন, সম্পর্ককে স্বাভাবিক প্রবাহে চলতে দিলে এবং সবাইকে সমানভাবে মর্যাদা দিলে এই বহুবিবাহের পরীক্ষাটি সফল করা সম্ভব।