আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত মঙ্গলবার, আমেরিকার মিসিসিপি হাইওয়েতে এক অদ্ভুত দুর্ঘটনা ঘটে। একটি ট্রাকে করে ২১টি পরীক্ষামূলক বাঁদর (রিশাস ম্যাকাক প্রজাতির) একটি গবেষণাগার থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু মাঝ পথেই ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। দুর্ঘটনার ফলে বাঁদরগুলির কিছু খাঁচা ভেঙে যায়। আর সেই সুযোগে তারা হাইওয়ের চারদিকে ছুটতে শুরু করে। ঘটনার জেরে মিসিসিপির ওই এলাকায় মুহূর্তে তুমুল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর জেসমার কাউন্টির পুলিশ দ্রুত সবাইকে সতর্ক করে। তারা জানায়, বাঁদরগুলি কেবল আক্রমণাত্মক নয়, তারা হেপাটাইটিস সি বা কোভিড-১৯-এর মতো সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হতে পারে! তাই তারা সাধারণ মানুষকে বাঁদরগুলির কাছে যেতে বারণ করে এবং দেখা মাত্রই পুলিশকে (৯১১-এ) ফোন করতে বলে।
কিন্তু পুলিশের এই ঘোষণার পরেই পুরো ঘটনাটি ঘুরে যায়। যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাঁদরগুলি নিয়ে যাওয়া যাচ্ছিল (তুলেন ইউনিভার্সিটি), তারা সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেয় পুলিশের এই দাবি ভুল! তারা নিশ্চিত করে, বাঁদরগুলি অন্য একটি সংস্থার সম্পত্তি এবং তারা কোনও সংক্রামক রোগে আক্রান্ত নয়।
তবে পুলিশের প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বাঁদরগুলিকে ধরার জন্য পশু সংস্থা এবং ওয়াইল্ডলাইফ সংস্থাকে ডাকা হয়। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে, খাঁচা থেকে পালানো বেশিরভাগ বাঁদরকেই গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। যদিও ঠিক কতগুলি বাঁদর পালিয়েছিল আর কতগুলি মারা গিয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ঘটনার জেরে এহেন চরম পদক্ষেপে পশুপ্রেমী ও প্রাণী অধিকার সংগঠনগুলি অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তাদের প্রশ্ন, কিছুক্ষণের জন্য স্বাধীনতা পাওয়া প্রাণীগুলিকে এত সহজে কেন মেরে ফেলা হলো? তাদের মতে, এই ঘটনাটি গবেষণাগারে ব্যবহৃত প্রাণীদের নিয়ে সরকারি নজরদারি ও স্বচ্ছতার অভাবকে তুলে ধরছে৷ অনেকেই মন্তব্য করেছেন,
"মিসিসিপির এই দুর্ঘটনাটি শুধু একটি গাড়ির উল্টে যাওয়া নয়, এটি গবেষণার কাজে প্রাণীদের এইভাবে ব্যবহার, তাদের পরিবহন এবং মেরে ফেলার মতো গোপন বিষয়গুলি জনসমক্ষে তুলে আনছে৷" সর্বোপরি এই ঘটনা ঘিরে এক বড় বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
