আজকাল ওয়েবডেস্ক: হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট নিজের দাম্পত্য জীবনের একান্ত কথা শেয়ার করতেই নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন। মাত্র ২৮ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেছেন নিকোলাস রিচ্চিওকে, যার বয়স ৬০। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয়বার মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার কয়েকদিন আগেই এই দম্পতির বিয়ে সম্পন্ন হয়।

সম্প্রতি Pod Force One with Miranda Devine পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লেভিট খোলাখুলি স্বীকার করেন, বয়সের ব্যবধান যতই অস্বাভাবিক হোক, তাদের সম্পর্ক নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসী। “এটা অস্বাভাবিক—এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই,” বলেন লেভিট। সঞ্চালিকা যখন মজা করে জিজ্ঞেস করেন, “আপনি কি নিজের বয়সী পরিপক্ক ছেলেদের খুঁজে পাননি?”— তখন লেভিট হেসে বলেন,
“সত্যি বলতে — না। যদি সত্য জানতে চান, তবে এটিই সত্য।”

কীভাবে হয়েছিল পরিচয়?

লেভিট জানান, ২০২২ সালে কয়েকজন পারস্পরিক বন্ধুর মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় হয় নিকোলাস রিচ্চিওর। সে সময় তিনি নিউ হ্যাম্পশায়ার থেকে কংগ্রেস নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন—যে নির্বাচনে তিনি শেষ পর্যন্ত হেরে যান। প্রথমে বন্ধুত্ব, পরবর্তীতে গভীর প্রেম—এভাবেই সম্পর্ক এগিয়ে যায়।

সাক্ষাৎকারে লেভিট বলেন, শুরুতে তার পরিবার এই সম্পর্কে বেশ অস্বস্তিতে ছিল, বিশেষ করে মা—কারণ নিকোলাস রিচ্চিওর বয়স তার মায়ের থেকেও বেশি। “শুরুটা কঠিন ছিল, এটা বলতেই হবে। পরিবারকে বোঝানো সহজ ছিল না।” তবে সময়ের সঙ্গে অবস্থার পরিবর্তন হয়। তিনি আরও বলেন, “তারা যখন তাকে কাছ থেকে চিনল, তার চরিত্র, আমার প্রতি তার সম্মান আর ভালোবাসা দেখল—সব সহজ হয়ে গেল। এখন আমরা সবাই খুব ভালো সম্পর্ক বজায় রাখি। আমার স্বামীও আমার বাবা-মাকে খুব সম্মান করেন। তারা যখন আসেন, আমরা একসঙ্গে দারুণ সময় কাটাই।”


ক্যারোলিন লেভিট তার স্বামীর ব্যক্তিত্ব ও পেশাগত সাফল্যেরও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “আমরা দীর্ঘদিন বন্ধু ছিলাম, তারপর একসময় প্রেম হলো। এখন আমরা বিবাহিত, আমাদের একটি সুন্দর সন্তান আছে। তিনি অসাধারণ একজন মানুষ।” রিচ্চিও সম্পর্কে তিনি জানান— তিনি অত্যন্ত শান্ত, অন্তর্মুখী। সামাজিক মাধ্যমে নেই। দীর্ঘ পরিশ্রমে নিজেকে গড়ে তোলা একজন সফল রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী। তিনি এমন জায়গায় পৌঁছেছেন যেখানে দাঁড়িয়ে স্ত্রী ক্যারোলিনের ব্যস্ত রাজনৈতিক ক্যারিয়ারকে পুরোপুরি সমর্থন করতে পারেন।


লেভিট বলেন, “তিনি পর্দার আড়ালে থাকতেই স্বচ্ছন্দ। আমি উল্টো—সামনের সারির মানুষ। কিন্তু ভিন্ন চরিত্রের হয়েও আমরা পরস্পরকে পরিপূর্ণ করি।” মার্কিন রাজনীতির ঝড়ের মাঝেও ক্যারোলিন লেভিট নিজের ব্যক্তিগত জীবনের স্বচ্ছতা ও আত্মবিশ্বাস দিয়ে যে বার্তা দিয়েছেন তা স্পষ্ট— প্রেম ও সম্পর্ক বয়স দিয়ে বিচার হয় না; বোঝাপড়া, সম্মান আর পারস্পরিক আস্থা দিয়েই সম্পর্ক দাঁড়িয়ে থাকে।

হোয়াইট হাউসের তরুণতম মুখপাত্র হিসেবে তিনি যেভাবে পেশাগত দায়িত্ব পালন করছেন, ঠিক তেমনই খোলাখুলি নিজের জীবনকথা শেয়ার করে মানুষের কৌতূহল ও সমালোচনার মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত।