আজকাল ওয়েবডেস্ক: তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিএলএ'রা যেন ছায়ার মতো থাকেন বিএলও'র সঙ্গে। তবে এবার তৃণমূলের বিএলএ দের উপর আক্রমণের অভিযোগ রাজ্যের শাসক দলের। তৃণমূল সূত্রে খবর, জোলিবাড়ির ৩৮ নম্বর বুথে দুই তৃণমূল বিএলএ আক্রান্ত। শারীরিক পরিস্থিতি বিচারে একজনকে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি এবং চিকিৎসাধীন অপরজনও।
তৃণমূলের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে ভগবানপুর ব্লক-১-এ দুই তৃণমূল বিএলএ-কে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আক্রমণ করা হয়। অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। অভিযোগ বিএলএ-২ পবিত্র কুমার সাউ এবং তাঁর সহকারী দেবব্রত মাইতির উপর আক্রমণ চালানো হয়। তথ্য, পবিত্র কুমার সাউকে ইতিমধ্যেই তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে, এবং দেবব্রত মাইতি ভগবানপুর গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনায় সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এদিন বলেন, 'এই আক্রমণের আসল কারণ, এসআইআর-এ যে ন্যায্য ভোটারদের যে বাদ দেওয়ার চক্রান্ত করছে বিজেপি, আমাদের তৃণমূল কর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাওয়ায় তাদের চক্রান্ত আটকে যাচ্ছে। সেই হতাশা থেকে এই বিশ্রী আক্রমণ।'
তৃণমূলের অভিযোগ, আক্রমণ চালিয়েছেন, দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হরিপদ দাস, জারিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যের স্বামী বাবুলাল কান্দার এবং ভগবানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী নির্মল দাস।
কুণাল বলেন, 'আমার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারির দাবি জানাচ্ছি। আমরা মনে করিয়ে দিচ্ছি, বেছে বেছে ন্যায্য ভোটার কাটার চক্রান্ত আমাদের কর্মীরা আটকে দিচ্ছেন বলে, তাঁদের উপর হামলা করা হচ্ছে।'
এসআইএ উঠে আসছে বিএলও'দের দুর্দশা, তা নিয়ে গতকাল নিজের পোস্টে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। পরের দিন, বৃহস্পতিবার এসআইআর ইস্যুতে কমিশনকে চিঠি দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে চিঠি লিখলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তাতে তিনি, দেরি না করে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিতের অনুরোধ জানিয়েছেন।
এসআইআর চলছে বাংলায়। শুরুর পর থেকেই একের পর এক মৃত্যুর খবর। আতঙ্কে, আশঙ্কায়, এমনকী এই প্রক্রিয়ায় যাঁরা কাজ করছেন, কাজের চাপে তাঁদের মৃত্যুর খবরও উঠে এসেছে।
এদিন মমতা চিঠিতে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছেন, 'চলমান বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) এবং জনগণের উপর এটি যেভাবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে আমি বারবার আমার গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) ঘিরে পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাই আমি আপনাকে লিখতে বাধ্য হচ্ছি। কর্মকর্তা এবং নাগরিকদের উপর যেভাবে এই প্রক্রিয়া চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে তা কেবল অপরিকল্পিত এবং বিশৃঙ্খলই নয়, বিপদজনকও।' গোটা প্রক্রিয়ায় প্রস্তুতি, পর্যাপ্ত পরিকল্পনা বা স্পষ্ট যোগাযোগের অভাব রয়েছে, তাও উল্লেখ করেছেন তিনি চিঠিতে।
চিঠিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, এই অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতে এবং প্রবল কাজের চাপের মধ্যে BLO-দের কাজ করতে হচ্ছে, কিন্তু BLO-দের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়নি। এই প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং সময়। অবাস্তব কাজের চাপ, অসম্ভব সময়সীমা এবং অনলাইন ডেটা এন্ট্রির বিষয়ে অপর্যাপ্ত সহায়তা সম্মিলিতভাবে সমগ্র প্রক্রিয়া নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে বিএলও'রা দুর্দশার মুখে পড়েছেন। তিনি চিঠিতে লিখেছেন, 'বিএলও-দের উপর অত্যধিক চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে, যা তাঁদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উদ্বেগজনক।’ কৃষিক্ষেত্রের এই ব্যস্ততম সময়ে SIR প্রক্রিয়া চলায়, তা সাধারণের উপরেও ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করছে, রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান উল্লেখ করেছেন সেই বিষয়টিও।
