তমালিকা বসু, লন্ডন: ১৫ই আগস্ট। ভারতের স্বাধীনতা দিবস।  ১৯৪৭ থেকে ২০২৫। প্রতি বছর এই বিশেষদিন পালিত হয়, বিশেষভাবে। ভারতের গ্রাম থেকে শহর, নগর, সর্বত্র পালিত হয় এই বিশেষ দিন। তবে কেবল ভারত নয়, ভারতের বাইরেও পালিত হয় তা।  লন্ডনের বার্কশায়ার অঞ্চলের রিডিং শহর। সেখানেও অত্যন্ত আনন্দঘন ও গৌরবময় পরিবেশে পালিত হল ভারতের ৭৯তম স্বাধীনতা দিবস। এই উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে ভারতীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশ, নেপাল এমনকি ব্রিটিশ সম্প্রদায়ের মানুষও স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। জাতি-ধর্ম-বর্ণের কোনও সীমারেখা নয়, উপস্থিত সকলের মধ্যে ছিল আনন্দ, উচ্ছ্বাস আর সম্মান-শ্রদ্ধা।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রিডিংয়ের সম্মানিত মেয়র ডঃ এলিস এমপোফু কলেস, গেরার্ডস ক্রসের মেয়র শ্রীমতি প্রেরণা ভরদ্বাজ এবং এক্স-চেয়ারপার্সন অব বাকিংহ্যামশায়ার কাউন্সিল, OBEপদকপ্রাপ্ত শ্রীমতি মিমি হার্কার। তাঁদের উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে আরও ব্যঞ্জনাময় এবং আন্তর্জাতিক করে তুলেছিল। রেডিং-এর বেঙ্গলি কালচারাল সোসাইটি (BCS)-এর  মুখপাত্র ও সমগ্র অনুষ্ঠানটির রূপকার শুভায়ন সেনগুপ্ত বলেন, 'দেশ থেকে হাজার মাইল দূরে থাকলেও নিজের মাটিকে কি কখনো ভোলা যায়? মূল্যবোধের শিকড় এই দিন আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমরা কোথা থেকে এসেছি এবং কী আদর্শে অনুপ্রাণিত। তাই আমাদের এই উদযাপন ছিল শুধু ভারতের স্বাধীনতা স্মরণের দিনই নয়, বরং ছিল শান্তি, সহাবস্থান, বৈচিত্র্য এবং মানবিকতার এক উদযাপন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারত। শুধুমাত্র নিজ দেশের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য এক অনুপ্রেরণা, এই অনুষ্ঠান সেই বার্তাকেই বহন করেছে।'

আরও পড়ুন: একই সঙ্গে স্বাধীনতা প্রাপ্তি, তাহলে কেন পাকিস্তান ১৪ই অগাস্ট স্বাধীনতা দিবস পালন করে?

অনুষ্ঠানের সূচনা হয় স্বাভাবিকভাবেই ভারতের জাতীয় সংগীত সহযোগে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে । এরপর একে একে পরিবেশিত হয় আন্না অনুষ্ঠান। পরিবেশিত হয় নৃত্য, সংগীত, কবিতা ও নাটক। শিশু-কিশোরদের প্রাণবন্ত অংশগ্রহণ অনুষ্ঠানটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে। 

অবশ্যই এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এই ধরনের অনুষ্ঠান আমাদের লন্ডন শহরের বহুবর্ণ সংস্কৃতি ও সহাবস্থানের শক্তিকে তুলে ধরে।  আমাদের মনে করিয়ে দেয় স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ,  মানবিকতা, সহনশীলতা ও একসঙ্গে এগিয়ে চলাকে। এই মিলনমেলায় ছিল বিভিন্ন প্রদেশের হরেক রকমের ফুড স্টল, নানা রঙের পোশাকের বাহারও। দিনটি ছিল ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপন, তবে যেখানে শুধু ভারত নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়া এবং ব্রিটেনের বহু সংস্কৃতি একসূত্রে বাঁধা পড়ে।