আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইলন মাস্ক সম্প্রতি সেই সব সংবাদ প্রতিবেদন খারিজ করে দিয়েছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছিল যে তাঁর রকেট ও স্যাটেলাইট নির্মাতা সংস্থা স্পেসএক্স শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে প্রায় ৮০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যায়ন চাইছে। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে মাস্ক স্পষ্ট করে জানান, এই ধরনের খবর সঠিক নয়।


ইলন মাস্ক লেখেন, “স্পেসএক্স ৮০০ বিলিয়ন ডলারে তহবিল তুলছে। এমন অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু সেটি ঠিক নয়।” তিনি আরও বলেন, “স্পেসএক্স বহু বছর ধরেই ক্যাশ ফ্লো পজিটিভ রয়েছে এবং বছরে দু’বার শেয়ার বাইব্যাক করে। এর মূল উদ্দেশ্য কর্মী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য লিকুইডিটি নিশ্চিত করা।”


মাস্ক তাঁর পোস্টে আরও ব্যাখ্যা করেন যে সংস্থার মূল্যায়ন মূলত নির্ভর করে স্টারশিপ ও স্টারলিঙ্ক প্রকল্পে অগ্রগতি, পাশাপাশি ডাইরেক্ট-টু-সেল গ্লোবাল স্পেকট্রাম সুরক্ষার ওপর, যার মাধ্যমে স্পেসএক্সের বাজার আরও বড় আকার নিতে পারে। তিনি ইঙ্গিত দেন, এর বাইরে আরও একটি বিষয় রয়েছে, যা সম্ভবত সংস্থার ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ—যদিও সেই বিষয়ে বিস্তারিত তিনি প্রকাশ করেননি।


ইলন মাস্কের এই বক্তব্য আসে ব্লুমবার্গ নিউজ-এর একটি প্রতিবেদনের পর, যেখানে সূত্রের মাধ্যমে দাবি করা হয়েছিল যে স্পেসএক্স নাকি ইনসাইডার শেয়ার বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই চুক্তি চূড়ান্ত হলে সংস্থার মূল্যায়ন প্রায় ৭৫০ থেকে ৮০০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয় যে এই শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে সংস্থার কিছু কর্মী ও প্রাথমিক বিনিয়োগকারী তাঁদের অংশীদারিত্বের একটি অংশ নগদে পরিণত করার সুযোগ পাবেন।


এর আগে, ৫ ডিসেম্বর ব্লুমবার্গ নিউজ-কে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্পেসএক্স এমন একটি লেনদেনের পরিকল্পনা করছে, যা হলে সংস্থার মূল্যায়ন ৫০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যমানের ওপেনএআইকেও ছাড়িয়ে যাবে। একাধিক সূত্র জানিয়েছিল, প্রস্তাবিত শেয়ারের দাম প্রতি শেয়ার ৪০০ ডলারের বেশি হতে পারে, যদিও চূড়ান্ত শর্ত এখনও পরিবর্তন সাপেক্ষ।


জানা গেছে, এই সম্ভাব্য টেন্ডার অফার নিয়ে বৃহস্পতিবার টেক্সাসের স্টারবেস হাব-এ স্পেসএক্সের বোর্ড বৈঠকও করেছে। যদি শেষ পর্যন্ত এই চুক্তি বাস্তবায়িত হয়, তাহলে স্পেসএক্স আবারও বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান বেসরকারি সংস্থার মর্যাদা পাবে। এর ফলে অক্টোবর মাসে চ্যাটজিপিটির মালিক ওপেনএআই যে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন ডলারের রেকর্ড মূল্যায়ন স্থাপন করেছিল, সেটিও পিছনে পড়ে যাবে।


উল্লেখযোগ্যভাবে, চলতি বছরের জুলাই মাসেও স্পেসএক্সের মূল্যায়নে বড় উত্থান দেখা গিয়েছিল। সেই সময় এক তহবিল সংগ্রহ পর্বে প্রতি শেয়ারের দাম ছিল ২১২ ডলার, যার ভিত্তিতে সংস্থার মোট মূল্যায়ন দাঁড়ায় প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার।


বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ রকেট অপারেটর হিসেবে স্পেসএক্স মহাকাশ শিল্পে কার্যত আধিপত্য বিস্তার করেছে। সংস্থার ফ্যালকন ৯ রকেট নিয়মিতভাবে স্যাটেলাইট ও মহাকাশচারীকে কক্ষপথে পাঠাচ্ছে। স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট পরিষেবা এবং স্টারশিপ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা স্পেসএক্সকে আগামী দিনেও মহাকাশ প্রযুক্তির শীর্ষে রাখবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।