আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুধবার ঘোষণা করেছেন যে ইজরায়েল ও হামাস তাঁর গাজা শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে সম্মত হয়েছে। তিনি একে “ঐতিহাসিক ও অভূতপূর্ব” পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন, যা দুই বছর ধরে চলা যুদ্ধে অবসান ঘটানোর পথে একটি বড় অগ্রগতি।


ট্রাম্প বলেন, এই চুক্তির আওতায় হামাস তাদের সব বন্দিদের মুক্তি দেবে এবং ইজরায়েল তার সেনা বাহিনীকে একটি নির্ধারিত সীমারেখার পেছনে সরিয়ে নেবে। মিশরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে তাঁর ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনার পর এই সমঝোতা সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি।


নিজের সামাজিক মাধ্যমে ট্রাম্প লেখেন, “আমি গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে ইজরায়েল ও হামাস উভয়ই আমাদের শান্তি পরিকল্পনার প্রথম ধাপে স্বাক্ষর করেছে,” । “এর অর্থ হচ্ছে, খুব শিগগিরই সব বন্দিরা মুক্তি পাবে এবং ইজরায়েল তার বাহিনীকে সঠিক সীমারেখায় ফিরিয়ে নেবে। এটি এক শক্তিশালী, টেকসই ও স্থায়ী শান্তির প্রথম পদক্ষেপ।” তিনি কাতার, মিশর ও তুরস্ককে মধ্যস্থতার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে লেখেন, “ধন্য শান্তির দূতেরা!”
মিশরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, ইজরায়েল ও হামাস বন্দি বিনিময় এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়ে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেন, “ঈশ্বরের কৃপায় আমরা আমাদের মানুষদের ঘরে ফিরিয়ে আনব।”

?ref_src=twsrc%5Etfw">October 8, 2025

 


ট্রাম্প আরও জানান, তিনি সম্ভবত এই সপ্তাহের শেষের দিকে মধ্যপ্রাচ্যে সফরে যেতে পারেন, কারণ “চুক্তি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে।” ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনায় যুদ্ধবিরতি, সব বন্দির মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং ধীরে ধীরে ইজরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফ ইতিমধ্যেই আলোচনায় যোগ দিয়েছেন।


গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর আল-মাওয়াসিতে রাতে ঘোষণা আসার আগের মুহূর্তে উচ্ছ্বাসের আবহ দেখা যায়। হামাস ইতিমধ্যেই প্রথম ধাপে মুক্তির জন্য ইজরায়েলে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের একটি তালিকা জমা দিয়েছে। বিনিময়ে, তারা অক্টোবর ৭, ২০২৩-এ ইসরায়েলে হামলার সময় আটক করা বাকি ৪৭ জন বন্দিকে—জীবিত ও মৃত উভয়কেই—মুক্ত করবে।


আলোচনায় কাতারের প্রধানমন্ত্রী ও তুরস্কের গোয়েন্দা প্রধানও যোগ দেন। হামাসের পাশাপাশি ইসলামিক জিহাদ ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্য লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। ২০২৩ সালের হামাস হামলার দ্বিতীয় বার্ষিকীর প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা চলছে। ওই হামলায় ১,২১৯ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন সাধারণ নাগরিক। হামলাকারীরা ২৫১ জনকে বন্দিকে গাজায় নিয়ে যায়, যার মধ্যে ৪৭ জন এখনও আটক রয়েছে। ২৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে ইজরায়েলি সেনাবাহিনী।


ইজরায়েলের পাল্টা অভিযানে এখন পর্যন্ত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে অন্তত ৬৭,১৮৩ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘ এই সংখ্যা “বিশ্বস্ত” হিসেবে স্বীকার করেছে, যেখানে অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু।


যুদ্ধবিরতির চুক্তি স্বাক্ষরের আগে পর্যন্তও গাজায় বোমাবর্ষণ অব্যাহত ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয় সিভিল ডিফেন্স সংস্থা। ইজরায়েল সীমান্তের কাছে অবস্থানরত এক সাংবাদিক জানান, সকালেও একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।