আজকাল ওয়েবডেস্ক: অস্ত্র বিক্রির বাজার পোক্ত করতে 'নোংরা' খেলায় মেতেছে চীন। রাফালে যুদ্ধবিমানের শক্তি এবং প্রযুক্তিগত সামর্থ্য নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে চিন। এমনই রিপোর্ট ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার।
নিজেদের যুদ্ধাস্ত্র বিক্রি করতে ভারত ও পাকিস্তান সংঘাতের প্রসঙ্গ টানছে বেজিং। ইসলামাবাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে চীন দাবি করছে যে, ওই সংঘাতে পাকিস্তানের ব্যবহার করা চিনা যুদ্ধবিমানের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেনি ভারতের ব্যবহৃত ফরাসী যুদ্ধবিমান রাফাল। তাই চীনের তৈরি যুদ্ধাস্ত্র কিনতে বিভিন্ন দেশকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এমনটাই দাবি ফ্রান্সের গোয়েন্দা আধিকারিকদের।
ফরাসী গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুসারে, রাফাল বিক্রি নিয়ে যে দেশগুলির সঙ্গে ফ্রান্সের কথাবার্তা এগিয়ে গিয়েছে, সেই দেশগুলিকে ওই যুদ্ধবিমান না-কেনার ‘পরামর্শ’ দিচ্ছে চিন। পরিবর্তে চিনা যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। রাফালের ‘ব্যর্থতা’ প্রমাণে ভাঙা যুদ্ধবিমানের ভুয়ো ছবি, ভিডিও দেখানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় তিনটি রাফাল-সহ ছ'টি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে বলে দাবি করেছিল পাকিস্তান। রাফালের প্রস্তুতকারী সংস্থা ফ্রান্সের 'ডাসল্ট এভিয়েশন' অবশ্য পাকিস্তানের ওই দাবি ‘ভুল’ বলে জানায়। একই সঙ্গে সংস্থাটির তরফে জানানো হয়, এই বিষয়ে ভারত তাদের কিছু জানায়নি। তবে ইসলামাবাদের তিনটি রাফাল গুলি করে নামানোর দাবি সঠিক নয় বলে জানান 'ডাসল্ট এভিয়েশন'-এর সিইও এরিক ট্র্যাপিয়ার।
সম্প্রতি, ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধান জেনারেল অনিল চৌহান প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন যে- পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের সময় তাদের অনির্দিষ্ট সংখ্যক যুদ্ধবিমান নামানো হয়েছিল। তবে, তিনি রাফাল ভূপাতিত করার পাকিস্তানের দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলেন যে- এগুলো "একেবারে ভুল"।
ফরাসী প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নিজেদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে যে, "রাফালকে এলোমেলোভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। এটি একটি অত্যন্ত সক্ষম যুদ্ধবিমান, বিদেশে রপ্তানি করা হয়েছে এবং এর কার্যকরিতা প্রমাণিত।"
বিশেষজ্ঞ ফরাসি গবেষকদের মতে, ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হাজারটিরও বেশি সোশাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট থেকে চীনা প্রযুক্তিগত শ্রেষ্ঠত্বের বিষয়টি ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। যা বিভ্রান্তিকর তথ্যে ভরা।
'ডাসল্ট এভিয়েশন' ৫৩৩টি রাফাল বিক্রি করেছে, যার মধ্যে মিশর, ভারত, কাতার, গ্রীস, ক্রোয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সার্বিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় রপ্তানি হয়েছে ৩২৩টি। ইন্দোনেশিয়া ৪২টি বিমানের অর্ডার দিয়েছে। দিল্লিও আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনছে। এর আগে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কিনেছিল ভারত। ২০১৬ সালের চুক্তি অনুসারে ভারতে আসা সেই যুদ্ধবিমানগুলিই এখন ব্যবহার করছে বায়ুসেনা।
