আজকাল ওয়েবডেস্ক: দু'সপ্তাহে, তিনজন। ফের খুন বাংলাদেশে। এবার নিশানায় আবারও হিন্দু যুবক! একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর তেমনটাই।
জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার একটি কারখানার নিরাপত্তারক্ষী ওই হিন্দু যুবককে গুলি করে খুন করা হয়েছে, তাঁর কর্মক্ষেত্রেই। সূত্রের খবর, ঘটনাটি ঘটেছে, সোমবার সন্ধেয়। ৬.৪৫ নাগাদ ভালুকা উপজেলা এলাকার লাবিব গ্রুপের পোশাক কারখানা সুলতানা সোয়েটার্স লিমিটেডে এই ঘটনা ঘটে। অর্থাৎ, দীপু দাস যেখানে কর্মরত ছিলেন, তাঁকে পিটিয়ে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল যেখানে, তার অনতিদূরেই ঘটে গিয়েছে এই মর্মান্তিম ঘটনা। তথ্য, নিহত ব্যক্তির নাম বজেন্দ্র বিশ্বাস (৪২) এবং অভিযুক্তর নাম নোমান মিয়া (২৯)। নোয়ামকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, বজেন্দ্র বিশ্বাস কারখানার নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। তিনি সিলেট সদরের কাদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা। তথ্য, দু'জনেই সেখানে নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করছিলেন। আচমকা নোয়াম মিয়া গুলি চালান বলে অভিযোগ।
এই প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন যোগাযোগ করেছিল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের সঙ্গে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি জানান, 'একজন নিরাপত্তারক্ষী, খুন করেছে অপর নিরাপত্তারক্ষীকে। বজেন্দ্র বিশ্বাসকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, যেখানে দীপু দাসের খুনের ঘটনা ঘটেছিল, তার পাশেই।'
বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার নিয়ে জোর চর্চা। সেই প্রসঙ্গ টেনে মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, 'লাগাতার সংখ্যালঘুদের উপর হামলা, হত্যাকাণ্ড। এটা আসলে একটি দেশের এক সম্প্রদায়ের মানুষের মনে অন্য সম্প্রদায়ের মানুষের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ গড়ে ওঠার কারণেই। সংখ্যালঘুকে দুর্বল ভাবার ফলেই এসব ঘটনা। ভাবনা, একজন হিন্দুকে অত্যাচার করলে কী বা যায় আসে। এটা আসলে রাজনৈতিক আবরণে দেশের চলমান ধর্মবিশ্বাসের প্রতিফলন। রাজনীতির মধ্যে ধর্মীয় অবস্থা থাকার কারণেই সারা দেশে এক ধর্মের অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণার মানসিকতা গড়ে উঠেছে। তা থেকেই পরপর এই ঘটনা ঘটছে। হত্যাই নয় কেবল। জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে ঘর-বাড়ি। ফিরোজপুরেও ঘর-বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে। আর এইসব অত্যাচারের পরে কোনও বিচার হয় না, দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ফলে এসবও বেড়েই চলেছে দিনে দিনে।'
এর আগে, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর, বাংলাদেশের রাজবাড়ি জেলায় বুধবার গভীর রাতে আরও এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ জানায়, বুধবার রাত প্রায় ১১টা নাগাদ রাজবাড়ির পাংশা এলাকায় এই গণপিটুনির ঘটনা ঘটে। পাংশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দেবব্রত সরকার জানান, এক ব্যক্তিকে স্থানীয়রা মারধর করছে, এমন খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। জানা গিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম অমৃত মণ্ডল, ওরফে সম্রাট। তিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। পুলিশ তাঁকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পাংশা উপজেলা হেলথ কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে রাত প্রায় ২টা নাগাদ চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
