পৃথিবীতে এমন কিছু জায়গা আছে, যেগুলোর সৌন্দর্য না দেখলে বিশ্বাসই হয় না। ঠিক তেমনই এক আশ্চর্য প্রাকৃতিক বিস্ময় রয়েছে, যেখানে বালি, বরফ আর সমুদ্র-তিনটি একসঙ্গে মিলিত হয়। শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তবেই রয়েছে এমন নজির । এই বিরল দৃশ্য দেখা যায় জাপানের হোক্কাইডো দ্বীপে।
2
7
সাধারণভাবে আমরা জানি, বরফ মানেই পাহাড় বা সমতল তুষারাচ্ছন্ন এলাকা, আর সমুদ্র মানেই নীল জল আর বালুকাময় সৈকত। কিন্তু হোক্কাইডোতে শীতকালে এই দুই বিপরীত প্রকৃতি একসঙ্গে ধরা দেয়।
3
7
এখানে তাপমাত্রা শূন্যের অনেক নিচে নেমে গেলেও সমুদ্র জমে যায় না। কারণ সমুদ্রের জলে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় সহজে বরফে পরিণত হয় না। ফলে একদিকে ঢেউ খেলানো সমুদ্র, আর ঠিক তার পাশেই তুষারে ঢাকা বালুকাময় সৈকত। দেখতে সত্যিই স্বপ্নের মতো।
4
7
হোক্কাইডোর কিছু নির্দিষ্ট সৈকতে এই দৃশ্য সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে। বিশেষ করে ওতারু ড্রিম বিচ বা আশপাশের উপকূলবর্তী এলাকায় শীতকালে বালির ওপর পুরু বরফের আস্তরণ জমে যায়। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন বরফের চাদরে মোড়া এক অদ্ভুত সৈকত, যেখানে সমুদ্রের নীল জল ধীরে ধীরে এসে ছুঁয়ে যাচ্ছে সাদা বরফ।
5
7
এই দৃশ্য সবচেয়ে ভাল দেখা যায় ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে। এই সময়ে হোক্কাইডোতে প্রচুর তুষারপাত হয়, কিন্তু সমুদ্র থাকে চলমান। প্রকৃতিপ্রেমী, ফটোগ্রাফার আর ভ্রমণপিপাসুদের কাছে এই সময়টা স্বর্গের সমান। সূর্যের আলো পড়লে সাদা বরফ, সোনালি বালি আর নীল সমুদ্র একসঙ্গে এমন রঙের খেলা দেখায়, যা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন।
6
7
ভ্রমণের দিক থেকেও হোক্কাইডো বেশ সুবিধাজনক। টোকিও থেকে বিমানে মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যায়। সাপ্পোরো শহরকে কেন্দ্র করে আশপাশের সৈকতগুলো ঘুরে দেখা যায় সহজেই। শীতকালীন ভ্রমণ পছন্দ করলে এখানে বরফে হাঁটা, সমুদ্রের ধারে ছবি তোলা আর স্থানীয় খাবারের স্বাদ নেওয়া-সব মিলিয়ে এক অনন্য অভিজ্ঞতা মিলবে।
7
7
পৃথিবীতে হাতে গোনা কয়েকটি জায়গার মধ্যে হোক্কাইডো অন্যতম, যেখানে প্রকৃতি নিজের সব রূপ একসঙ্গে মেলে ধরে। বালি, বরফ আর সমুদ্রের এই অদ্ভুত মিলন সত্যিই প্রকৃতির এক বিস্ময়কর উপহার।