আজকাল ওয়েবডেস্ক: একপ্রস্থ বাড়চি শুল্ক চাপানোতেই কাজ হয়নি। বাগে আনা যায়নি ভারত-সহ রাশিয়ার থেকে তেল কেনা দেশগুলিকে। উল্টে কাছাকাছি চলে আসছে ভারত, চীন ও রাশিয়া। দিশাহারা ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে, রাশিয়ার থেকে তেন আমদানিকারী দেশগুলির উপর আরও শাস্তির খাঁড়া চাপাতে মরিয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রবিবার মার্কিন ডোনাল্ড ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার 'দ্বিতীয় পর্যায়ের' পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত! এমন একটি পদক্ষেপ যা ভারতের মতো দেশগুলিকেও আঘাত করতে পারে।

রুশ বিমানবাহিনীর হামলায় ইউক্রেনের রাজধানী শহর কিয়েভের একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কমপ্লেক্স ছাড়খাড় হয়ে গিয়েছে।তার পরই ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারি।

হোয়াইট হাউস রাশিয়া বা তার তেল ক্রেতাদের উপর নতুন পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞার জন্য তিনি প্রস্তুত কিনা জানতে চাইলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিস্তারিত কিছু জানাননি। সংক্ষিপ্ত উত্তরে শুধু বলেছেন "হ্যাঁ, আমি আছি।" 

রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাত দীর্ঘায়িত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে, বিশেষ করে তার পূর্ববর্তী শান্তি প্রচেষ্টা যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে, ট্রাম্পের মন্তব্য প্রশাসনের মধ্যে হতাশা ক্রমশ বাড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট্রের হুঁশিয়ারি তারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করা হচ্ছে। 

অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো নিয়ে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্টের মন্তব্যে তৈরি হয়েছে জল্পনা। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি বলেন যে, দেশগুলি রাশিয়ার কাছ থেকে ক্রুড তেল কেনে, তাদের উপরে যদি ওয়াশিংটন ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন আরও শুল্ক ও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়, তাহলে রাশিয়ার অর্থনীতি ভেঙে পড়বে।  

এনবিসি নিউজ-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্কট বেসেন্ট বলেন, "প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ইউরোপীয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লায়েনের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন ফোনে। রাশিয়ার উপরে কীভাবে আরও চাপ সৃষ্টি করা যায়, তা নিয়ে আমেরিকা ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের মধ্যে আলোচনা হয়েছে।"

পারস্পারিক শুল্ক বা পাল্টা শুল্ক হিসাবে প্রথমেই ভারতের উপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছিল আমেরিকা। তাতে ভারত কোনও আপত্তি জানায়নি। তবে এরপরই রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপরে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাতেই গর্জে ওঠে ভারত। আমেরিকার এই সিদ্ধান্তকে 'অনৈতিক, অযৌক্তিক, অন্যায্য' বলেই উল্লেখ করে নয়াদিল্লি। তার মধ্যেই ফের একবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের হুঙ্কার, রাশিয়ার সঙ্গে অংশীদারী দেশগুলির উপরে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরও তীব্রতর হয়েছে
রবিবার রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাশিয়া রবিবার ইউক্রেনের রাজধানীতে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এটিই সবচেয়ে বড় বিমান হামলা। যার ফলে ইউক্রেনে চারজন নিহত হয়েছেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাশিয়া ৮১০টি ড্রোন এবং ডিকয় দিয়ে আক্রমণ করেছে। পাল্টা ইউক্রেন ৭৪৭টি ড্রোন এবং চারটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে।

নতুন করে হামলার প্রতিক্রিয়ায়, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জানিয়েছেন যে, তিনি শান্তি চুক্তি নিয়ে আলোচনার পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে প্রস্তুত, এবং যুদ্ধ শেষ করার জন্য রাশিয়াকে চাপ দেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে রাশিয়ার উপর শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন।