আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিকেলবেলায় বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির উঠোনেই খেলছিল ছ'বছরের নাবালিকা। বাজারে সামান্য কাজ ছিল মায়ের। খেলাধুলা ছেড়ে মায়ের সঙ্গে বাজারে যেতে রাজি হননি। কিছুক্ষণ পর বাড়ি ফিরেই আর সন্তানকে দেখতে পাননি তরুণী। সেদিন থেকে শুরু খোঁজ। ৪৪ বছর দেশের আনাচে-কানাচে খুঁজেছেন। অবশেষে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ্যে আসতেই ডুকরে কেঁদে উঠলেন। চার দশক পর মেয়েকে কাছে পেয়েই আনন্দে আত্মহারা মা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। ১৯৭৫ সালে মে মাসে সিউল থেকে নিখোঁজ হয় ছ'বছরের কুয়াং হা নামের নাবালিকা। হ্যান ট্যা-সুন নামের মহিলা জানিয়েছেন, সেদিন বাজার থেকে ফিরে আর মেয়েকে খুঁজে পাননি। ৪৪ বছর ধরে খুঁজেছেন। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন। পুলিশ খোঁজ দিতে না পারলেও, তিনি আশা ছাড়েননি।
২০১৯ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি সমাজসেবী সংস্থা জানায়, হ্যান চার দশক ধরে তাঁর মেয়েকে খুঁজছেন। এই সংস্থাটি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে কোরিয়ার দত্তক নেওয়া সন্তানদের সঙ্গে আসল মায়েদের মিলিয়ে দেয়। এই সংস্থার সাহায্যেই ৪৪ বছর পর মেয়েকে খুঁজে পান হ্যান।
জানা যায়, ছ'বছরের কুয়াংকে অপহরণ করে, বেআইনিভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করে দেওয়া হয়। সেখানে ক্যালিফোর্নিয়ায় ল্যারি বেন্ডার নামে একটি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত। ডিএনএ পরীক্ষার পরেই কুয়াং ও হ্যানের মিলন হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় মায়ের সঙ্গে দেখা করতে ছুটে আসেন কুয়াং। এরপর জানান, সেদিন তাঁকে অপহরণ করে অনাথ আশ্রমে নিয়ে যাওয়া হয়। বেআইনিভাবে ভিন দেশে পাচার করা হয়। তারপর দত্তক নেয় এক পরিবার। ৪৪ বছর পর আসল মাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন কুয়াং।
