আজকাল ওয়েবডেস্ক: জুলাই মাসের শেষ দিন। আর শেষ দিনেই যে তথ্য সামনে এসেছে, তাতে রীতিমতো ভয় ধরেছে বাকিদের মধ্যে। তথ্য, জুলাই মাসেই বেশ কয়েকটি প্রথম সারির সংস্থা হাজার হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। তালিকায় মাইক্রোসফট, ইনটেল, টিসিএস-এর মতো সংস্থা। তথ্য, ২০২৫ সালের জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই করেছে সংস্থাগুলি। তথ্য, এক মাসে ২৬টি সংস্থা ২৪,৫৪৫ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে। যদিও এই বিপুল কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রাথমিক কারণ হিসেবে উঠে আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রমরমা। 

জুলাইয়ের শুরুতেই মাইক্রোসফট ঘোষণা করে যে তারা তাদের বিশ্বব্যাপী কর্মীদের প্রায় চার শতাংশ ছাঁটাই করছে। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে, আরেকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইন্টেল ঘোষণা করে যে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চারটি রাজ্যে ৫,০০০ এরও বেশি কর্মী ছাঁটাই করছে। ভারতের সর্ববৃহৎ তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা সংস্থা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (TCS) রবিবার জানিয়েছে, তারা তাদের মোট কর্মীর ২ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ১২,০০০ জনকে আগামী এক বছরের মধ্যে ছাঁটাই করবে। বিশ্বজুড়ে এই কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত মূলত মধ্য ও উচ্চ স্তরের ব্যবস্থাপনায় কর্মরতদের প্রভাবিত করবে। টিসিএস-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা চালিত প্রযুক্তিগত রূপান্তরের ফলে ব্যবসায়িক কাঠামোয় বদল আনতে হচ্ছে। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে TCS-এর মোট কর্মী সংখ্যা ছিল ৬,১৩,০৬৯।

আরও পড়ুন: পেটে সন্তান জেনেও লাথি, মাটিতে ফেলে মারধোর! ‘আমি না মরলে, মেরে ফেলবে ওরা’, মা’ কে মেসেজ করেই ওই কাজ করে

উন্নত প্রযুক্তি, নিত্য নতুন উপায়। তাতে একদিকে যেমন হাজার হাজার সমস্যা লাঘব, তেমনই সমস্যাও কম নয়। এআই, চ্যাটবট সমস্যা কমালেও, এক পক্ষের সমস্যা যে বিপুল হারে বাড়বে তা নিয়ে ভাবনা ছিলই। সময় যত এগোচ্ছে, প্রযুক্তি কার্যকরী হচ্ছে কর্মক্ষেত্রে, বাড়ছে সঙ্কটও। দিন কয়েক আগেই জানা গিয়েছিল, আর্থিক অনিশ্চয়তা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব পড়ছে আইটি খাতে।

এর মাঝেই জানা গিয়েছে, কেবল এআই এই সংস্থার কর্মীদের উপর কোপ ফেলছে তেমনটা নয়, উন্নত প্রযুক্তির প্রভাবে চাকরি হারাতে পারেন অন্তত ৪০ খাতের চাকুরীজীবীরা। সর্বভারতীয়  সংবাদসংস্থা সূত্রে খবর, মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এই ভয় ধরানো তথ্য। কী বলা হয়েছে তাতে? সূত্রের খবর, মাইক্রোসফটের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, একাধিক চাকরির এমন রয়েছে, যেখানে এআই- চ্যাটবটের জন্য চলে যেতে পারে সেই চাকরি। কোপ পড়তে পারে লক্ষ লক্ষ কর্মীর উপরে।


কোন কোন চাকরির উপর, কতটা প্রভাব ফেলতে পারে এআই? জানানো হয়েছে তাও-
তালিকার শীর্ষে রয়েছেন দোভাষী এবং অনুবাদক যাদের স্কোর ০.৪৯, তারপরেই রয়েছেন ইতিহাসবিদ (০.৪৮), যাত্রী পরিচারক (০.৪৭) এবং পরিষেবা বিক্রয় প্রতিনিধি (০.৪৬)। এআই প্রাসঙ্গিকতার অন্যান্য কাজের মধ্যে রয়েছে লেখক(০.৪৫), গ্রাহক পরিষেবা প্রতিনিধি (০.৪৪), সিএনসি টুল প্রোগ্রামার (০.৪৪) এবং টেলিফোন অপারেটর (০.৪২)। তালিকায় টিকিট এজেন্ট, রেডিও ডিজে, টেলিমার্কেটার, সংবাদ বিশ্লেষক, রাজনৈতিক বিজ্ঞানী,  সম্পাদক,  জনসংযোগ বিশেষজ্ঞদের কাজও অন্তভূর্ক্ত রয়েছে। ০.৩৪ থেকে ০.৪৯ পর্যন্ত প্রযোজ্যতা স্কোরের এই চাকরিগুলি যোগাযোগ এবং শিক্ষা থেকে শুরু করে অর্থ, আতিথেয়তা এবং প্রযুক্তি পর্যন্ত ক্ষেত্রগুলিকে বিস্তৃত করে। 
গবেষকদের পর্যবেক্ষণ, এই কাজগুলি সহযেই এআই দ্বারা পূর্ণ সম্ভব। কারণ এই কাজের বেশিরভাগ অংশ সম্পন্ন করতে সক্ষম এআই।