আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্যালেস্টাইনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ১৯টি নতুন ইহুদি বসতি অনুমোদনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় নিন্দা জানাল ১৪টি দেশ। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক যৌথ বিবৃতিতে কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যসহ এই দেশগুলি স্পষ্টভাবে জানায়, ইজরায়েলের এই একতরফা পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন এবং তা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে অস্থিরতা উসকে দিতে পারে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পশ্চিম তীরে বসতি সম্প্রসারণের এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত বৃহত্তর একটি নীতির অংশ, যা দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক সমাজের আপত্তির মুখে রয়েছে। এই ধরনের পদক্ষেপ কেবল আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গই নয়, গাজা পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রস্তাবিত ‘কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান’-এর বাস্তবায়নকেও বিপন্ন করছে। বিশেষ করে গাজা পরিকল্পনার দ্বিতীয় পর্যায়ে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা যখন চলছে, তখন এই বসতি সম্প্রসারণ শান্তি প্রক্রিয়াকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে সতর্ক করেছে দেশগুলি।
যৌথ বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ইজরায়েলের যে কোনও ধরনের ভূখণ্ড দখল বা সংযুক্তিকরণ (annexation)-এর বিরোধিতা তারা আগেও করেছে এবং এখনও সেই অবস্থানেই অনড় রয়েছে। বিশেষ করে বিতর্কিত ‘E1’ এলাকায় বসতি গড়ার পরিকল্পনা ও হাজার হাজার নতুন আবাসন ইউনিট অনুমোদনের বিষয়টি দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের সম্ভাবনাকে আরও দুর্বল করছে বলে মত প্রকাশ করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে ১৪টি দেশ ইজরায়েল সরকারকে অবিলম্বে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। একই সঙ্গে বিদ্যমান বসতিগুলির সম্প্রসারণ বন্ধ করারও দাবি জানানো হয়েছে, যা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ২৩৩৪-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ওই প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, অধিকৃত প্যালেস্টাইন ভূখণ্ডে ইজরায়েলের বসতি স্থাপন আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং তা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।
বিবৃতিতে প্যালেস্টাইনের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার আবারও উল্লেখ করা হয়েছে এবং একটি “সমন্বিত, ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তি”-র প্রতি অটল অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে। ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে দুই রাষ্ট্র সমাধান- যেখানে ইজরায়েল ও প্যালেস্টাইন, দুটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমান্তের মধ্যে পাশাপাশি শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে- এই পথই একমাত্র গ্রহণযোগ্য বিকল্প বলে উল্লেখ করেছে দেশগুলি।
যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলি হল- বেলজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড, জাপান, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন এবং যুক্তরাজ্য। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য, আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান ছাড়া এই দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের কোনও বিকল্প নেই এবং বসতি সম্প্রসারণ সেই আলোচনার পথকে আরও সংকীর্ণ করে দিচ্ছে।
