আজকাল ওয়েবডেস্ক: কোনও মহিলা যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলা মানেই তা ধ্রুব সত্য বলে ধরে নেওয়া যাবে না। গুরুত্ব দিতে হবে অভিযুক্তের বক্তব্যকেও। এ নিয়ে পুলিশকে সতর্ক করে দিল কেরল হাইকোর্ট। এছাড়াও উচ্চ-আদালতের পরামর্শ, অভিযোগকারিণীর বক্তব্যের ভিত্তিতে যৌন নির্যাতনের মামলায় তদন্ত একতরফা করা যাবে না। 

এক মহিলা কর্মীকে সংস্থারই এক পুরুষ কর্মীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। থানায় অভিযোগ হতেই, পুলিশ অভিযোগকারিণী মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে সংস্থার ৫৭ বছর বয়সি ওই কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে। অভিযুক্তের দাবি ছিল, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। জামিনের আবেদন করে কেরল হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্ত। অভিযুক্তের দাবি ছিল, সংস্থায় উপযুক্ত কাজ না করার জন্য  অভিযোগকারিণীকে তিনি কাজ থেকে সরিয়ে দেন। তারই প্রতিশোধ নিতেই ওই মহিলা ওই 'ভুয়ো মামলা' করা হয়েছে। আদালতে ওই কথোপকথনের অডিও রেকর্ডিংও জমা দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। থানায় অভিযোগও করেছিলেন। ওই পুলিশি অভিযোগের কপিও আদালতে জমা দেন অভিযুক্ত। মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, পুলিশ যৌন হেনস্থার মামলা রুজুর আগে পুরনো অভিযোগটি খতিয়ে দেখেনি।

এই  মামলার শুনানি চলে কেরল হাইকোর্টের বিচারপতি পি ভি কুনহিকৃষ্ণনের বেঞ্চে। সেই শুনানিতে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, শুধুমাত্র মহিলার বক্তব্যকে সত্য বলে ধরে নেওয়া যায় না। তদন্তকারীদের অভিযোগকারিণী এবং অভিযুক্ত- উভয়েরই দাবি যাচাই করে দেখতে হবে। একতরফা বক্তব্যের ভিত্তিতে তদন্ত এগোলে ভুল প্রভাব পড়তে পারে। এর ফলে অভিযুক্তের মান সম্মানেরও ক্ষতি হতে পারে। আদালত আরও বলেছে যে, মিথ্যা অভিযোগের কারণে একজন নাগরিকের যদি ক্ষতি হয়, তা কেবল অর্থ প্রদানের মাধ্যমে পূরণ করা যায় না। তাই তদন্তকারী আধিকারিকদের দু'পক্ষের বক্তব্যই সমান গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা প্রয়োজন।

বিচারপতি পি ভি কুনহিকৃষ্ণনের মতে, তদন্তে যদি দেখা যায় মহিলা মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন, তবে অভিযোগকারিণীর বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ করার অধিকার রয়েছে তদন্তকারীদের।

উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর অভিযুক্তকে জামিন দেয় আদালত।