আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে ফের এক নৃশংস হত্যাকাণ্ড রাজস্থানে। এবার ঘটনাস্থল জয়পুর। শুধুমাত্র প্রেমের সম্পর্ক নয়, সংসারে নিত্যদিন অশান্তি, শারীরিক নির্যাতন ও সন্দেহের জেরেই স্বামীকে নৃশংসভাবে খুন করল স্ত্রী। তার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছে প্রেমিক ও আরও এক যুবক। খুনের বর্ণনা শুনে চমকে উঠেছে পুলিশও।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, খুনের ঘটনাটি ঘটেছে গত শনিবার। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত যুবকের নাম মনোজ। তিনি ই-রিক্সা চালাতেন। তাঁর স্ত্রী সন্তোষ দেবী একটি কারখানায় কাজ করত। সেই কারখানাতেই কাজ করত আরও এক অভিযুক্ত ঋষি শ্রীবাস্তব। কাজের সূত্রে পরিচয় হলেও, কিছুদিনের মধ্যেই তারা গভীর প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপর মনোজকে খুনের পরিকল্পনা করে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, খুনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ঋষির এক বন্ধু মোহিত শর্মাও যোগ দেয়। তিনজনে মিলে গুগলে সার্চ করে বিভিন্ন খুনের ঘটনা পড়ত। কীভাবে মনোজকে খুন করলে কারও সন্দেহ হবে না, এমনকী তারাও ধরা পড়বে, তা নিয়ে খুঁটিনাটি পড়াশোনা করেছিল। এমনকী নৃশংস কিছু হত্যাকাণ্ড নিয়ে পড়াশোনার পর, জনপ্রিয় কিছু ক্রাইম থ্রিলার ওয়েব সিরিজও দেখেছিল।
এরপর তিনজনে মিলে নতুন সিম কার্ড কেনে। কোন জায়গায় খুন করা হবে, তাও পরিদর্শন করে। শনিবার মনোজের ই-রিক্সা করেই ইসকন মন্দিরের উদ্দেশে রওনা দেয় মোহিত। দশ মিনিট পরেই মোহিতের সঙ্গে ঋষি দেখা করে। এরপর সেই ই-রিক্সা নিয়ে একটি নির্জন এলাকায় পৌঁছে যায় তারা। সেখানে ধারালো ছুরি দিয়ে মনোজের গলা কেটে খুন করে।
সেই স্থানেই মোহিত ও ঋষি নিজেদের পোশাক বদলে ফেলে। তারপর ওই সিম কার্ডের ফোনটি বন্ধ করে দেয়। ঘটনাস্থলে কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল না। কিন্তু সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে পুলিশ। এরপর তিনজনকেই একসঙ্গে জেরা করা হয়। পুলিশি জেরায় তারা স্বীকার করেছে, এক মাস আগে খুনের ঘটনার পরিকল্পনা করেছিল।
প্রসঙ্গত, গত শনিবারেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের জেরে আরও একটি ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ড ঘটেছে রাজস্থানের আলওয়ারে। রাজস্থানের নীল ড্রাম রহস্যের কিনারা করেছে পুলিশের। ওই নীল ড্রাম থেকে ৩৫ বছর বয়সি যে যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, তাঁকে খুন করার অভিযোগ ওঠে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, যুবককে খুন করেছে তাঁর স্ত্রী সুনীতা। এই খুনের তাকে সাহায্য করেছিল তার প্রেমিক।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, যুবককে খুনের পর সুনীতা ও তার প্রেমিক মিলে দেহটি নীল ড্রামের মধ্যে লুকিয়ে রেখে, তাতে লবণ ভরে দিয়েছিল। এই ঘটনায় সুনীতা ও তার প্রেমিক জিতেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, জিতেন্দ্র ওই বাড়ির মালিকের ছেলে। বর্তমানে দুজনেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, সুনীতা ও জিতেন্দ্র কয়েক মাস আগেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপরই হংসরাজকে খুনের পরিকল্পনা করে। এক সপ্তাহ আগে নীল ড্রামটি কিনে ছাদে রেখে দিয়েছিল সুনীতা। এও জানা গেছে, মাত্র দেড় মাস আগে তিন সন্তান, স্বামীর সঙ্গে ওই বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেছিল সুনীতা। অন্যদিকে জিতেন্দ্রর স্ত্রী ১২ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। সুনীতার সঙ্গে অল্প কয়েকদিনে কথোপকথনের পরেই প্রেমে পড়ে যায়। খুনের পর তিন সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিল সুনীতা। তদন্ত শুরুর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
