আজকাল ওয়েবডেস্ক: রেনে জোশিলদা। একধিক স্কুলকে পাঠানো বোমা হুমকিতে তাঁর নাম জড়িয়েছে। গুজরাট পুলিশের হেফাজতে থাকা ওই যুবতীকে, ফের গ্রেপ্তার করেছে বেঙ্গালুরু পুলিশ। সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে বেশ কয়েকটি স্কুলে বোমা হুমকির ভুয়া ইমেল পাঠানোর ঘটনায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে কেন ওই যুবতী এই কাজ করেছেন, তা জেনে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশের। সামনে এসেছে অবাক করা তথ্য।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, জোশিলদা কেবল কর্ণাটকের নানা স্কুলেই ভুয়ো বোমা হুমকি পাঠাতেন না। তিনি দেশের নানা জায়গার স্কুলে, নানা সময়ে বোমা হুমকি পাঠিয়েছেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, ওই যুবতী চেন্নাই, হায়দরাবাদ এবং গুজরাট-সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে স্কুল এবং পাবলিক ভেন্যুতে বোমা হামলার হুমকি দিয়েছিলেন। তিনি বিভিন্ন শহরের একাধিক স্কুলে এমনকি গুজরাটের আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেও ভুয়া মেল পাঠিয়েছিলেন।
বেঙ্গালুরু পুলিশ জানিয়েছে, জুন মাসে আহমেদাবাদ পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল, কিন্তু কর্ণাটক পুলিশের তদন্তের সময় জানা গিয়েছে, কর্ণাটকের স্কুলগুলিতেও পাঠানো ভুয়া বোমা হামলার হুমকির পিছনেও তাঁর হাত ছিল। ওই যুবতীকে বডি ওয়ারেন্টে নিয়ে বেঙ্গালুরুতে আনা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে, বেঙ্গালুরু স্কুলে বোমা হামলার হুমকির সাতটি মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তিনি স্কুল গুলিতে ভুয়ো হুমকি ইমেল-এ লিখতেন, আহমেদাবাদের বিমান দুর্ঘটনার মতো, ভয়াবহভাবে স্কুলগুলিকে নিমেষে উড়িয়ে দেওয়া হবে।
কিন্তু, কেন এই ঘটনা তিনি পরপর ঘটিয়েছেন? কারণ কী?
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, যুবতী তাঁর আসল অবস্থান এবং পরিচয় গোপন করে ইমেলগুলি পাঠানোর জন্য একটি ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) ব্যবহার করেছিলেন। তিনি একাধিক অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করার জন্য 'গেট কোড' নামক একটি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ভার্চুয়াল মোবাইল নম্বর পেয়েছিলেন। তাঁর কার্যকলাপের জন্য ব্যবহৃত ছয় থেকে সাতটি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের মালিকানা পাওয়া গেছে।
কাজের পদ্ধতি অবাক করা হলেও, কারণ আরও অবাক করা। জানা গিয়েছে, এই ব্যাপক সন্ত্রাসী অভিযানের পিছনের মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রতিশোধহীন প্রেম। জানা গেছে, ওই মহিলা এক যুবকের প্রেমে পড়েছিলেন। কিন্তু ওই যুবক তাতে রাজি হননি। যুবক, যুবতীর প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তারপর থেকেই তিনি যুবকের বিরুদ্ধে প্রতিশোধের পরিকল্পনা করতে থাকেন।
যুবতী চেয়েছিলেন, তিনি একাধিক স্কুলে এবং অন্যান্য জায়গায় ক্রমাগত বোমা হুমকি দেওয়ার পরে, সেই অভিযোগে, মিথ্যে মামলায় ওই যুবককেই ফাঁসাবেন। যদিও ঘটনা একসময়ে গিয়ে ঘুরে যায় এবং আসল পরিকল্পনাকারী পুলিশের জালে ধরা পড়েন।
রেনে জোশিলদার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (পশ্চিম বিভাগ) বংশী কৃষ্ণ এবং ডিসিপি (উত্তর বিভাগ) নেমাগৌড়ার নেতৃত্বে পরিচালিত বিশেষ তদন্ত দল বর্তমানে অভিযুক্তদের পুঙ্খানুপুঙ্খ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
