আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইউটিউব ভিডিও দেখে সার্জারি। রোগীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে গিয়ে ঘটল বিপত্তি। হাতুড়ে ডাক্তারদের কীর্তিতে মর্মান্তিক পরিণতি হল এক মহিলার। বিজেপি শাসিত রাজ্যে আবারও তুমুল শোরগোল।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশে। পুলিশ জানিয়েছে, বারাবাঙ্কিতে মর্মান্তিক পরিণতি হয়েছে ৩৮ বছর বয়সি এক মহিলার। বেআইনি এক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইউটিউব ভিডিও দেখে সার্জারি করেন দুই হাতুড়ে ডাক্তার। সেই ভুল অপারেশনের জেরেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন ওই মহিলা।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তরা হলেন, প্রাক্তন গ্রাম প্রধান ও তাঁর ভাগ্নে। দু'জনে মিলে বেআইনিভাবে ওই ক্লিনিকটি চালাতেন। দিনের পর দিন গ্রামের বাসিন্দাদের ভুল চিকিৎসাই করতেন। এবার ইউটিউব ভিডিও দেখে অপারেশনের জেরে মহিলার মৃত্যুর পর তাঁদের কীর্তি প্রকাশ্যে এসেছে।
মহিলার মৃত্যুর পর রাতভর রাস্তা আটকে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবিতেও প্রতিবাদে সরব হন। বিক্ষোভের জেরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় বিশাল পুলিশ বাহিনী।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত মহিলার নাম, মুনিসরা রাওয়াত। গত কয়েকদিন ধরেই তলপেটের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। গত ৫ ডিসেম্বর তাঁর স্বামী ফতেহ বাহাদুর রাওয়াত তাঁকে নিয়ে শ্রী দামোদর ঔষধালয়ে যান। সেই ক্লিনিকেই কাজ করতেন প্রাক্তন গ্রাম প্রধান জ্ঞান প্রকাশ মিশ্রা। বাহাদুর জানিয়েছেন, স্ত্রীর কোনও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেননি অভিযুক্তরা। ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার পরেই, তাঁর স্ত্রীর তলপেটে হাত দিয়েই জানান, গলস্টোন অপারেশন করতে হবে। দেরি হলেই মুশকিল।
অপারেশনের জন্য ২৫ হাজার টাকা চেয়েছিলেন মিশ্রা। ২০ হাজার টাকা দিতেই অপারেশনের জন্য রাজি হয়ে যান তিনি। পুলিশ জানিয়েছেন, জ্ঞান প্রকাশ এবং ভাগ্নে বিবেক মিশ্রার কোনও মেডিক্যাল ডিগ্রি নেই। ভুল অপারেশনের জেরে অতিরিক্ত রক্তপাত হয় মহিলার। পরদিন সকালে তাঁর মৃত্যু হয় ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
মৃত মহিলার স্বামীর অভিযোগ, পাল্টা টাকা দিয়ে বিষয়টা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন অভিযুক্তরা। পুলিশ জানিয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। দুই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। বর্তমানে দু'জনেই পলাতক। তাঁদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, কয়েক সপ্তাহ আগে মধ্যপ্রদেশে দুই হাতুড়ে চিকিৎসকের দৌরাত্ম্যে দু’টি শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ছতরপুর এবং খান্ডোয়া জেলায়, পৃথক দুই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে একাধিক শিশু। পরিবারের অভিযোগ, হাতুড়ে ডাক্তারের গাফিলতি এবং ভুল চিকিৎসার কারণেই এই পরিণতি।
ছতরপুরের ঘটনায় ২০ দিনের এক সদ্যোজাতকে ভুল ওষুধ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক হাতুড়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। পরিবারের দাবি, ওই ওষুধ খাওয়ার পরেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। মায়ের কোলেই নিথর হয়ে যায় সে। সন্তানের মৃত্যুশোক সহ্য করতে না পেরে জ্ঞান হারান মা।
অন্য ঘটনাটি খান্ডোয়া জেলার গাঁধওয়া গ্রামের। সেখানে দেড় বছরের এক বালককে পরপর বেশ কয়েকটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আর এক ভুয়ো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। গ্রামবাসীদের দাবি, অভিযুক্ত যুবক ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে গিয়ে মাঝপথেই পড়া ছেড়ে দেশে ফিরে আসেন। কিছুদিন আগেই একটি ছোট দোকানে ক্লিনিক খুলে বসেন তিনি।
